এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বস (পর্ব-০৭)

| By Admin | Filed in: চটি কাব্য.

এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বস (পর্ব-০৬)

গল্প – এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বস
পর্ব – ০৭
———————————–

তারপর দিন কলেজে….
আমিঃলিপি কাল যা বলছিলাম তা মনে আছে তো
লিপিঃহ্যা মনে আছে
আমিঃতাহলে মিমি আসলে তার সামনে দেখিয়ে অভিনয়টা করবা ঠিক আছে
লিপিঃযা বলছো ভেবে বলছো তো
আমিঃহুমম..(কি করব এখন যদি মিমির সাথে relations করে যাই তো মিমির বাবার কাছে স্বার্থপর হয়ে যাবো। আর আমি তো মিমিকে স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসছি।জানি এখন যে কাজ করছি মিমি আমাকে ক্ষমা করবে না। তারপর ও আমাকে করতে হবে কারণ আমি যে পরিস্থিতির স্বীকার)

লিপিঃআচ্ছা ঠিক আছে তুমি যখন বলছো তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই
আমিঃলিপি অই যে দেখো মিমি আসছে(আজ মিমি অনেকটাই অবাক হয়ে গেছে যে আমি লিপির সাথে কথা বলছি। আর মিমিও জানতো যে লিপি কয়েকবার প্রোপজ করছিল)
লিপিঃহ্যা আসছে তো এখন কি করতে হবে
আমিঃবেশি কিছু না আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছু প্রেম আলাপ কথা বলবা
লিপিঃআমি পারব না
আমিঃলিপি করো না প্লিজ আমাকে যে মিমির চোখে খারাপ হতেই হবে
লিপিঃআচ্ছা ঠিক আছে

তারপর মিমিকে দেখিয়ে

আমিঃআচ্ছা জান তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো(লিপির কাধে হাত রেখে)
লিপিঃঅনেক যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না(মিমি আমাদের কান্ড দেখছে আর চোখের পানি ফেলছে)
আমিঃতাহলে আমাকে একটা পাপ্পি দাও তো
লিপিঃএখন না জান পরে দিবো(মিমি আর সহ্য করতে না পেরে আমাদের সামনে আসলো। আমি আরও দেখিয়ে দেখিয়ে লিপির সাথে অভিনয়টা বেশি বেশি করছি)

আমিঃলিপি তুমি কিন্তু বলেছো যে আমাকে কলেজে সবাই সামনে কিস করবা তাহলে করছো না কেন(মিমিকে শুনিয়ে)
লিপিঃনা আমি পারব না(মিমি চোখের পানি ফেলছে আর আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে)
আমিঃতাহলে তো আমি জোর করেই কিস করব (বলে লিপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি তারপর মিমি যা করল তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি)
মিমিঃঠাসস ঠাসস ঠাসস ছি এই তোর চরিত্র
আমার সাথে রিলেশন থাকা অবস্থাই অন্য মেয়ের সাথে এসব করছিস(কান্না করে)
আমিঃ….(আমি কল্পনাও করতে পারিনি মিমি আমাকে থাপ্পড় মারবে)
মিমিঃকি হলো চুপ হয়ে গেলি কেন। বল আমি তো তোকে আমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবেসেছিলাম তারপর ও কেন তুই আমার সাথে এমনটা করলি(কান্না মাত্র আর ও বেড়ে গেলো)
আমিঃআমি….(আমার কথা থামিয়ে)
মিমিঃচুপ আরেকটি কথা আমি শুনতে চাই না। তুই যে একটা চরিত্রহীন তা আমার জানা হয়ে গেছে।আমি আজই বাড়িতে চলে যাবো (কান্না করে )
আমিঃমিমি দাড়াও
মিমিঃতোর অই নোংরা মুখে আমার নাম নিবি না।আজ থেকে আমি ভুলে যাবো যে তোর সাথে যা ছিলো সব মিথ্যার নাটক
ছিলো

তারপর আমার আর লিপির ছোট এই অভিনয়ে মিমির সাথে আমার ব্রেক আপ হই

আরদিকে দেখতে দেখতে পরীক্ষা ও চলে আসলো।তাই যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে গেলাম
এখন মিমিও আমার দিকে ভুলেও তাকিয়ে দেখে না। যদি আমি তাকিয়ে থাকি তো মিমি অনেক রেগে যাই।

কিছুদিন যাবার পর। আমার ভালো লাগছিলো না মিমির সাথে কথা না বলে থাকতে তাই মিমির সাথে একটু চাইলাম। তারপর কলেজে কিছুক্ষণ খুজার পর লক্ষ্য কর লাম নেহা আর মিমি বাড়িতে চলে যাচ্ছে
তাদের সামনে যেয়ে প্রথম নেহা কে বল্লাম

আমিঃনেহা কেমন আছিস
নেহাঃভালো
মিমিঃনেহা তুই এই ফালতু ছেলের সাথে কেন কথা বলছিস
আমিঃমিমি..
মিমিঃচুপ তোর অই মুখে আমার নাম শুনতে চাই না।(রেগে)
আমিঃআমার কথাটা আগে শুনো
মিমিঃকি শুনব তোর থেকে তুই একটা চরিত্রহীন
আমিঃমিমি…ঠাস(রাগটা­ কন্ট্রোল করতে না পেরে মিমির গালে থাপ্পড় মেরে দিলাম)
মিমিঃচল নেহা এখানে আর এক মুহূর্ত ও দারাব না(বলে মিমি চলে গেলো)
আমিঃ…..(এই আমি কি করে ফেললাম মিমিকে থাপ্পড় মেরে দিলাম)
নেহাঃরনি তোর কাছ থেকে এটা কখনো আশা করিনি। তুই কেমনে ওর গায়ে হাত তুলতে পারলি
আমিঃনেহা আমার মাথা কাজ করছে না
নেহাঃতুই ও একদিন ঠিকই আফসোস করবি(বলে নেহাও চলে গেলো)

আমিঃআমি তো পাথরের মুক্তির মতো দারিয়ে রইলাম। এই আমি কি করলাম।
কি থেকে কি হয়ে গেলো।

তারপর থেকে মিমি আর আমার সাথে কথা বলেনি।যেখানে আমাকে দেখেছে তো সেখানে মিমি এক সেকেন্ড ও দাড়ানি। মাঝে মধ্যে নেহাকে জিজ্ঞেস করতাম

আমিঃনেহা মিমি এখন আমাকে দেখলে এমন করে কেন…?
নেহাঃতুই এখন ওর চোখে ঘৃণার পাত্র হয়ে গেছিস। এখন তোকে সহ্য করতে পারে না তাই এমন করে।
আমিঃঅহহ(মন খারাপ করে)
নেহাঃআসিরে মিমি আবার তোর সাথে দেখলে রাগ করবে
আমিঃআচ্ছা যা(এখন মিমির চোখে ঘৃণার পাত্র গেলাম একসময় মিমি আমাকে কত ভালোবাসতো। ছোট একটা অভিনয়ে সব শেষ করে ফেললাম)

এভাবে কিছুদিন কেটে গেলো। এখন পরীক্ষা নিয়ে আমিও ব্যাস্ত হয়ে গেলাম। মিমিও কদিনে আমাকে ভুলে পড়ালেখাই মন দিল। কেনই বা আমাকে মনে রাখবে। আমি তো তার সাথে প্রতারণা করেছি।তাহলে সেই প্রতারণাকে মনে রেখে তার কি লাভ।

দেখতে দেখতে পরীক্ষাটাও শেষ হয়ে গেলো।
এখন মিমিও হইতো তার বাড়িতে চলে যাবে।
এই কথা ভেবেই আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
আমি তো মিমিকে কম ভালোবাসিনি।শুধু মিমির বাবার জন্য আমাকে এসব করতে হলো। আমি মিমির সাথে যা করেছি হইতো মিমির কাছে সারাজীবন অপরাধী হয়ে থাকব।
তারপর রেজাল্টের দিন

আশরাফঃআজ অনেক ভয় করছে রে
আমিঃকেন
আশরাফঃআরে মামা আজই তো রেজাল্ট দিবে
আমিঃতো কি হইছে
আশরাফঃআজ যদি রেজাল্ট ভালো না হই তো
আমিঃআরে চিন্তা করিস না ভালো রেজাল্টই করবি(এতি মধ্যে নেহা আর মিমিও চলে আসছে)

কিছুক্ষন পর স্যার রেজাল্ট সাইনবোর্ডে লাগিয়ে দিলো। সবাই রেজাল্ট দেখছে।আর হাসি মুখে বের হয়ে আসছে।কিছুক্ষণ আশরাফ ও চলে আসলো। কিরে এখনো বসে বসে কি দেখছিস যা রেজাল্টটা দেখে আই কেমন হইছে
নারে ভালো লাগছে না। আচ্ছা তোর রোল নং টা বল আমি দেখে আসছি(তারপর আশরাফ কে বললাম। আশরাফ চলে গেলো
রেজাল্ট দেখতে)

এখন শুধু একটা কথা ভেবে খারাপ লাগছে।
মিমি তো আর এখানে থাকবে না। যদিও এখন আমার সাথে কথা বলে না। তারপর ও তো তাকে তাকে দেখতে পেতাম। (তারপর লক্ষ্য করলাম মিমি আর নেহা তারা দুই অনেক হাসাহাসি করছে।তারপর তাদের সামনে গেলাম)

আমিঃমিমি কেমন আছো…?(আমি কথা বলতেই হাসি মাখা মুখ নিমিষেই কালো করে ফেলো)
মিমিঃ………!
আমিঃনেহা আজ একটু মিমিকে বলনা আমার সাথে যেন কথা বলে
নেহাঃসরি আমি পারব না
আমিঃমিমি আমার কথাটা শুনো। কেন আমি এসব করেছি(আর এভাবে থাকতে পারলাম না। তাই সত্যটা মিমিকে বলতে যাচ্ছি)
মিমিঃআমি কোনো চরিত্রহীন

নতুন ভিডিও গল্প!

প্রতারকের কোনো কথা শুনতে পারব না

আমিঃমিমি প্লিজ আর এভাবে থাকতে পারছি না আমার কথাটা একবার শুনো
মিমিঃকি বললাম শুনতে পাননি। এই নেহা চল এসব ফালতু লোকের কথা শুনে মিছে মিছে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। (বলে নেহাকে নিয়ে মিমি চলে গেলো)

আমি যখন মিমিকে সত্যটা বলতে চাইছিলাম তখন অনেক দেরি করে ফেলছি।

কিছুদিন পর মিমিও নেহাদের বাড়ি ছেড়ে তাদের বাড়িতে চলে গেলো। আমি একথা শুনে আর ঠিক থাকতে পারলাম না। চলে গেলাম নেহাদের বাসায়। দরজাই কয়েকবার
নক করার পর নেহার মা দরজা খুলে দিলো

নেহার মাঃকাকে চাই
আমিঃআন্টি আমি নেহার I​
নেহার মাঃঅহহ আচ্ছা ভিতরে আসো..?
আমিঃআন্টি নেহা কি বাসায় আছে
নেহার মাঃহ্যা আছে আসো

তারপর নেহার রুমে গেলাম

নেহাঃআরে রনি যে হঠাৎ আমাদের বাসায়
আমিঃনেহা তুই আমাকে বললি না কেন মিমি চলে গেছে
নেহাঃএখানে থেকে আর কি করবে তুই যা শুরু করেছিস
আমিঃএসব আমি করেনি মিমির বাবার জন্য সব হয়েছে
নেহাঃবুঝলাম না মিমির বাবার জন্য সব হয়েছে মানে…?
আমিঃশুন তাহলে তুই একদিন আমাকে মিমির বাবার সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দিলি যে
নেহাঃহুমম তা তো দিয়েছি। সেদিন মামা তোকে কি বললো তা আর আমাকে বললি না
আমিঃশুন তাহলে (তারপর নেহাকে সব

বললাম)

নেহাঃকি বলছিস এসব
আমিঃহ্যারে মিমির বাবার জন্য এসব আমাকে করতে হইছে
নেহাঃতোকে একটা সত্য বলব রাগ করবি না তো
আমিঃআরে রাগ করব কেন বলল
নেহাঃতুই আর মিমি রাস্তায় ফুসকা খাবারের সময় তুই মিমিকে ফুসকা খেতে দেখে ছিলো কি
আমিঃহ্যা দেখে ছিলো
নেহাঃতারপর মামা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো প্রথমে বলতে চাইনি পরে বলতে বাধ্য হয়ে তোর আর মিমির ব্যাপারে বলি দেই তারপরই এসব শুরু হই
আমিঃ……….(তার মানে নেহা সব জানতো)
নেহাঃসরি রনি আমাকে ক্ষমা করে দিস

আমিঃ………..
নেহাঃআমি জানি তুই আমাকে ক্ষমা করতে পারবি না তারপর বলছি পারলে ক্ষমা করে দিস

আমিঃআসিরে….(মনে খারাপ করে বাড়িত চলে আসলাম।নেহাও অনেক ডেকেছে কিন্তু তার ডাকে সাড়া না দিয়ে বাডিতে চলে আসলাম)

তারপর আমি কোনো কিছু না ভেবে মিমির কাছে ফোন দিলাম। কয়েকবার কেটে দিলো
তারপর মেসেজ দিলাম তারপর ও মিমি ফোন ধরছে না। এভাবে ৫০ থেকে ৬০ বার কল দিবার পর মিমি ফোন বন্ধ করে ফেলো।

২ দিন পর মিমির কাছে ফোন করলাম। এবার আর কেটে কাটল না হইতো আমার আগ্রহ দেখে ফোনটা রিসিভ করল

আমিঃহেলো মিমি
মিমিঃকেন এত বিরক্ত করছিস
আমিঃমিমি তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে
মিমিঃআমার ফালতু সময় নেই যে তোর বকবক শুনব
আমিঃ মিমি তোমাকে ছাড়া আমি একদম ভালো নেই (এখন কেমনে জানি হারানোর ভয় কাজ করছে)
মিমিঃতোর এই মিথ্যা নাটক আমাকে দেখাতে আসিস না।আমার জানা হয়ে গেছে তুই কেমন মিথ্যাবাদী। আমার মতো আর কত মেয়েকে নাই কাদিয়েস
আমিঃমিমি বিশ্বাস করো। আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসিনি
মিমিঃতাহলে অইদিন লিপির সাথে যা দেখলাম সেটা কি ছিলো
আমিঃঅইটা তো..(আমার কথা থামিয়ে)
মিমিঃচুপ আর মিথ্যা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলতে হবে না।আর শুন তোকে ভালো করে একটা কথা বলে রাখি।যদি নেক্সট টাইম আমার ফোনে কোনো মেসেজ কিংবা কল দেস তো আমি থানাই তোর নামে মামলা করব যে তুই ফোনে আমাকে ইভটিজিং করেছিস(বলে ফোন কেটে দিলো)

মিমিকে সত্যটা যখন বলতে চাইলাম তখন মিমি আমাকে ছেড়ে

আমাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছে
তারপর আর যোগাযোগ করতে সাহস পাইনি। কারণ মিমি আমাকে ভালো বলে দিয়েছে যে আমি ফোন দিলে নাকি আমার নামে ইভটিজারের মামলা করবে। সেটা ভেবে আর যোগাযোগ করতে সাহস পাইনি। তারপর মিমিকে আমার জীবন থেকে একেবারেই হারিয়ে ফেলি

এভাবেই দেখতে দেখতে ৫ টা বছর কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না।

তারপর বাবা আমাদের কে ঢাকায় এনে পড়ল পরিবারের সমস্যা থাকার কারনে। কিছু দিন যাবার পর বাবার শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর পরিবারের দায়িত্বটা আমার কাধে পড়ে। ফলে কয়েক্টা ইন্টারভিউ দিলাম কাজ হলো না। তারপর আমার বন্ধু সজিব সেই মিমিদের কোম্পানিতে জয়েন করতে বলে আমার জানা ছিলো না যে এই মিমি হচ্ছে আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড মিমি
আজ ভাগ্যের কি পরিহাস তার কোম্পানিতে আসতে হলো আর মিমি যা বললো তা আপনারা জানেনই।

এইছিলো অতীতের ঘটে যাওয়া কিছু গল্প

[চলবে…]


Tags: , ,