নিলক্ষার চর – আল মাহমুদ (৩য় পর্ব)

December 6, 2020 | By Admin | Filed in: বিখ্যাত লেখকদের সাহিত্যে যৌনতা.

॥ দুই॥

মইষা সত্যি সত্যি আড়বাঁশে ঠেস দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। দুটি পা ঘড়ির কাঁটার মতাে ছড়িয়ে দিয়ে নিশ্চিত নিদ্রা। যেন কিছুই আসে যায় না তার। সে জানে তাকে এই তিন দানব প্রকৃতপক্ষে তাদের ভােগের তৃপ্তির জন্য এ চরে নিয়ে এসেছে। তবে তাদের ব্যবহারটা যে এতটা বিনয়ী হবে এবং ভজনাকারীর মতাে তােষামােদের মতাে গলে পড়বে এতটা মইষা আন্দাজ করতে পারেনি। এখন সে নিশ্চিত হয়ে নাকে মৃদু শব্দ তুলে ঘুমাচ্ছে। তার দুটি সুপুষ্ট স্তন উঁচু হয়ে ওঠানামা করছে। গলা দিয়েও শ্বাসপ্রশ্বাসের একটা অদ্ভুত শব্দ চুলার পাড়ে বসে তিন দানব শুনতে পাচ্ছে। কালা বলল, ওস্তাদ মাগিটা কালা না ফরসা বুঝতে পারলাম না। তােরাইব্যা এমন একটা সময়ে আইসা আঘাটায় ভিড়ল মুখটা কেমন হিডাও দেখলাম না। তবে বেশ জোয়ান আছে। এইটা বােঝা যায়। আইজ রাতে খাওয়ার পরেই ওরে লইয়া আমরা তিনজন চরের যেখানে সবচে বেশি নতুন ঘাস আছে সেখানে নিয়া শুয়ামাে। কী কও? আমারে লাথি মাইরা ফালাই দিও না ওস্তাদ। আমি গায়ে গতরে তােমাদের সাথে পারুম না। কিন্তু আমার ভাগটা আমারে খাইতে দিও। কামাল গম্ভীর গলায় একটু হাসির চেষ্টা করল। তরে তাে হারামজাদা না পারলে ওই মাগিটাই কী যেন নাম মইষা না ভইষা লাথি মাইরা ফালাই দিব। এ কথায় তােরাব হেসে বলল, শালা কালার বাচ্চা তুই অত বড় মইষের মতাে মইষার সাথি কী করবি রে বেটা! লাথি তর খাইতেই অইব। তারপর তিনজনই এক সাথে হেসে উঠল। তিন দানবের অট্টহাস্যে আড়বাঁশে ঠেস দেয়া মইষা ঋষির ঘুম চটে গেল। সে আড়বাঁশের ঠেস দেয়া অবস্থা থেকে পিঠ সিদা করে বসে পড়ল। কই গেলিরে রাখাইল্যারা? ভাত রানতে এত দেরি লাগে? কালা সেখান থেকেই জবাব দিল, হইয়া গেছে বইন, একটু সবুর কর। কালার বইন শব্দ শুনে বাকি দুই রাখাল ফিস ফিসিয়ে হাসল। তর আবার বইন অইল কেমনে? শালা তর মা! বইন অইলে আমরা তর বইনজামাই হমু! শ্লেষ মিশিয়ে হাসল তােরাব। কামাল বলল, নে শালা কালার বাচ্চা আমারে সেলাম কর। আমি তর বইনজামাই। রাখাল তিনজনের কথাবার্তা বেশ স্পষ্টভাবেই মইষার কানে আসছিল। সে একটা সিগ্রেট ধরিয়ে উঠে দাঁড়াল। তারপর সােজা গিয়ে হাজির হলাে চুলার পাশে এবং নিজেই ভাতের পাতিলে রাখা বাঁশির ধজি দিয়ে সিদ্ধ হওয়া ভাত তুলে নিয়ে বাঁ হাতে টিপে দেখল। হইছে, পাতিল উল্টাইয়া ফ্যান ছাড়াইয়া আন। হয়ে গেছে সব। আমি গিয়া ওইখানে বসি। তরা সানকি লইয়া ওই জায়গায় চইলা আয় ।

পাতিল থেকে মুখটা তুলে মইষা সােজা হয়ে দাঁড়াবা মাত্র কালা একটা জ্বলন্ত শিখাযুক্ত লাকড়ির টুকরা চুলা থেকে নিয়ে মইষার সামনে ধরল। তােমার চেহারাটা কেমন দেখি বইন। দেখ! আমি দুর্গার মতাে। যদিও আমার নাম মইষা। বলেই কাচভাঙার মতাে খিলখিলিয়ে হাসল মইষা। সবাই মইষাকে ঘিরে সানকির ওপর গরম সাদা ভাত ও দুধের সর নিয়ে নুন মাখিয়ে খেতে শুরু করেছে। মইষা লােকমার পর লােকমা খাচ্ছে একটি উপােসী ভিখিরির মতাে। আর ফাকে ফাকে হাসছে। এই বেজন্মারা তােদেও খানা বহুত মজার। এই খাইয়াইতাে শরীরে এত তেল । দেখতে এককটা ষাঁড়ের মতাে। তাে খাওয়া হয়ে গেলে কে আমারে লইয়া চরে ঘুরব ক দেহি? তিনজনই লােলুপ দৃষ্টিতে মইষার দিকে তাকাল। কামাল ও তােরাবের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে মইষা হাসল। এই তর নাম কিরে? কালাকে জিজ্ঞেস করল মইষা। কালীচরণ! তুই বেটা আবার কালীচরণ হইলি কেমনে! হিন্দু নাকি।। তা তাে জানি না। বাথানের মালিকের বাড়িতে আমার মা কাম করত। আমি হইয়া গেছি। কে জানে আমার বাপ হিন্দু না মুসলমান আছিল। ততক্ষণে খাওয়া সাঙ্গ হয়েছে। কালা প্রত্যেকের সানকি তুলে নিয়ে পেছনে চলে গেল। মইষা ফস্ করে একটা সিগ্রেট ধরিয়ে আড়বাঁশে ঠেস দিয়ে দুই ঠ্যাং ছড়িয়ে দিল। কামাল ও তােরাবের কোলের কাছে মইষার দুই বিছানাে উরু। তারা লুব্ধ দৃষ্টিতে মইষার উরতের দিকে লালা ঝরানাে দৃষ্টি মেলে চুপ করে আছে।

তরা দুই জন না। আগে আমারে কান্দে লইয়া চরে ঘুরব ওই হারামজাদা। হের আহাতাহা বেশি। আজ রাইতটা ওই কালীচরণের। তরা সবুর মাইন্যা থাকবি। পরের রাত, এর পরের রাত তরা দুই জনের। খাবলা খাবলি করবানা রাখাইল্যা বেডারা। আমি তাে তরারে দিবার লাইগ্যাই আইছি। কত খাইবি! বলতে বলতে মইষা উঠে দাঁড়াল। কোমর থেকে পঁাচ দেয়া শাড়িটা খুলে আড়বাঁশের ওপর রাখল। ছায়ান্ধকারে হা করে তাকিয়ে রইল কামাল ও তােরাব? মনে হলাে বিশাল দুটি স্তন ব্লাউজের একটা মাত্র বােতামে বাঁধ মানছে না। দুদিক থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসছে। সবই আবছা ছায়ার মতাে দুই রাখালের চোখে পড়ছে। তারা যেন মন্ত্রমুগ্ধেও মতাে মইষার ধমকে টোলের ছাত্র হয়ে চুপচাপ বসে থাকল। এই সময়ে কালা এসে হাসি মুখে দাঁড়িয়েছে। সেও অবাক। মুহূর্তের মধ্যে তার হাসিটা উবে গেল। তার সামনে শুধু একটা ব্লাউজ পরে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মইষা ঋষি। এই হারামজাদা! আমারে কান্দে লইয়া বাইর। ঘাড়টা নােয়া।

নিজেই এগিয়ে এসে তার দুই কাঁধে দুই রান ছড়িয়ে মইষা বলল, ওঠ, তােল আমারে। আজ তরে লইয়া যামু যমুনায়। কালা একটা সহজ বােঝার মতাে মইষাকে কাঁধে তুলে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর মইষার ইশারায় চলতে লাগল ঘাস ভর্তি চাদনি রাতে উথলে পড়া নদীর বাতাসের মধ্যে। মধ্যচরের দিকে। পেছন থেকে তােরাব ও কামাল দৃশ্যটা দেখে ছাউনিতে এসে দাঁড়াল। আকাশে তখন চাঁদের মুখটা নীলের তস্তুরীতে সিদ্ধকরা আধখানা ডিমের মতাে। দেখাচ্ছে। যেন আকাশে কেউ একটি অপূর্ণ সােনার ডিম গড়িয়ে দিয়ে মেঘের ভেতর লুকিয়ে পড়েছে। একদিকে সপ্তর্ষি তারার প্রশ্ন চাঁদের উদরে ঝিলমিল করতে লাগল। ঘালা কালার ভাইগ্যটা দেখছস, তােরাব? দেখতাছি। কিন্তু আফসােস হে তাে এই মহিষানি মইষার তেল মজাইতে পারব না। ওই বেটা সারাজীবন গাইয়ের লাথি খাইয়া সামনের দাঁত ফালাই দিছে। আইজ দেখিস ওর বুকে লাথি মরবে মাগিটা। তুইত জানস না কামাল এই মইষানিরে আত করতে আমার কত কষ্ট করতে হইছে। ঋষিপাড়ার বেডারা বুঝতে পারলে আমারে কাইট্যা ফালাইত। জানস না দত্তখলার ঋষিরা কুবাইয়া বাউনবাইড়ার কত খেতঅলারে তিতাসের কূলে মাড়িচাপা দিয়া রাখছে। আমি আনলাম কারণ একশ ট্যাহা সােজা কথা না। মাসে একশ ট্যাহা দিমু কইতেই মইষানি ওইঠ্যা খাড়াইয়া গেল গা। আর এখন কী না একটা বাছুরের কান্দে ওইটা চরে রওয়ানা দিছে। ঠিক আছে। সান্ত্বনা দিয়ে হাসল কামাল। কাল রাইতে তর পালা। আইচ্ছা কইরা রস মিটাইয়া দিবি। নাম রাখছে আবার মইষা ঋষি। কাল ষাড়ের গুঁতা খাইলেই মাগি বুবং বাথানের রাকখালরা দুধের সর খাইয়া কেমন পাথর হইয়া গেছে। হাঁটতে হাঁটতে ঘাড়ে একটা নগ্ন দানবীকে নিয়ে যেন চলছে কালীচরণ। সে মজাই পাচ্ছে কারণ মইষা মাঝে মধ্যেই তার কান টেনে বলছিল, এই আরাে জোরে হাঁট। এখন এতদূও চলে এসেছে সম্ভবত এখান থেকে তাদের থাকার ছাউনিটা এই চাদের আলােতে আর দেখা যাচ্ছে না। আর কত চলুম? এর পরে তাে চর শেষ, নদী শুরু। আমারে লইয়া কি নদীতে ডুববা নাকি? মইষাকে উদ্দেশ্য করে আপন মনে কথাগুলাে বলল কালীচরণ। সে রীতিমত ঘামছিল। মইষা তার বাহনের ক্লান্তি ও ঘর্মাক্ত অবস্থাটা আন্দাজ করতে পেরে বলল, থাম হারামজাদা! নামা আমারে। এ কথায় কালীচরণ সােজা বসে পড়ল এবং ঘাড়ের বােঝাটার টাল রাখতে না পেরে গড়িয়ে পড়ল চরের ঘাসে।

মা গাে! হারামজাদা আমারে ঘাসের উপর হুতা দিছে। জিরাইয়া ল বেডা। আর আমি হুইয়া একটা সিগারেট খাই আর চান্দের মুখ দেখি। বলেই খিলখিল করে হাসতে লাগল মইষা ঋষি। সে দুপা ছড়িয়ে নগ্ন হয়ে শুয়ে আছে। তার এক বােতামঅলা ব্লাউজের ভেতর থেকে উইয়ের ঢিবির মতাে বেরিয়ে এসেছে দুটি স্তন। যেন কালাে মাটির বড় দুটি মুছি।

কিন্তু কালীচরণ তার ঘর্মাক্ত শরীর নিয়েই হামাগুড়ি দিয়ে মইষার পাশে এসে বসল এবং তার তলপেটে এবং নাভীতে হাত ঘসতে লাগল। ওই হারামজাদা! উঠবি তাে উইঠা পড়। মইষা ঋষি তার পা দুটি ইষৎ ভাঁজ করল । চাঁদের আলাে চরভূমিতে এখন এক অদ্ভুত চোরাই দুধের ভাড় যেন উবুড় করে দিয়েছে। উঠ হারামজাদা। আর হাত ঘসবি না। এবার কোন কথা না বলে কালীচরণ মইষার উপর শুয়ে পড়ল। ঠিক সে সময়েই এক খণ্ড মেঘ এসে চাঁদকে আড়াল করে দিয়েছে। চরভূমিতে উঠে এসেছে দুধের বদলে তিতাসের মাখনাগন্ধি কালাে পানির আবরণ।


Tags: , , , ,

Comments are closed here.