এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বস (পর্ব-০১)

January 3, 2021 | By Admin | Filed in: বান্ধবী.

গল্প – এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বস
পর্ব – ০১

———————————–

বাবা আর কতদিন এভাবে বসে বসে খাবি…
মা আমি তো ইন্টারভিউ অনেকটাই দিলাম কিন্তু কাজ তো হলো না।
তারপর ও বাবা তোকে চেষ্টা করতে হবে
মা এ-যুগে টাকা ছাড়া কিছুই সম্ভব না
এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা রাস্তায় নেমে পরব
তোর বাবা আজ প্রায় ৩মাস ধরে বিছানায় পরে আছে। এখন তুই ছাড়া সংসার হাল কে ধরবে।
মা আজ একটা ইন্টারভিউ আছে দেখি কি হই
আচ্ছা বাবা চেষ্টা করে যা চাকরি একটা না একটা তো হবেই
হুম সেটাই জেন হই
মা বাবার খেয়াল রেখো আমি বরং ইন্টারভিউ দিতে যাই
যা বাবা

তারপর ইন্টারভিউ দিতে গেলাম
এখনো প্রায় ৩০ মিনিটের মতো বসে থাকতে হবে এই ফাকে পরিচয়টা দিয়ে দেই কেমন
আমি রনি হাসান লেখাপড়া শেষ করে চাকরি খুঁজছি কিন্তু চাকরি মামা সে তো হচ্ছে না তার পিছনে কারণ হলো টাকা হ্যা অনেক টাকার দরকার। এ যাবত প্রায় ১০টা ইন্টারভিউ দিয়েছি কিন্তু কাজ হইনি এবার এইটা না হলে আমার চাকরির আশা বাদ দিতে হবে

পিয়নঃরনি কে…..
আমিঃজ্বী আমি….
পিয়নঃভিতরে আসুন ম্যাম যেতে বলছে…?
আমিঃওকে যাচ্ছি

(এই কোম্পানির মালিক তাহলে একটা মেয়ে যাই হক ভালো হলো যদি লাইন মারতে
পারতাম)

আমিঃআসব ম্যাম….?
ম্যামঃহ্যা আসুন (অফিসের ফাইল চেক করছে এমন সময়)
আমিঃ….
ম্যামঃআপনার নাম কি রনি(আমার দিকে তাকাতেই)
আমিঃজ্বী(আমি তো অবাক হয়ে গেলাম)
ম্যামঃআপনি আসতে পারেন(ম্যাম আমাকে চিনেই একথা বলল)
আমিঃমিমি প্লিজ আমার এই চাকরিটা খুব দরকার
ম্যামঃআপনার চাকরি হবে না। আর আপনার সাহস কিভাবে হই আমার নাম ধরে ডাকার(রেগে)
আমিঃভুল হয়ে গেছে। আর নাম ধরে ডাকব না
ম্যামঃএবার আপনি আসুন….(রেগে)
আমিঃচাকরিটা খুব দরকার ছিলো (করুণসুরে)
ম্যামঃআপনাকে কি ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে হবে (অনেকটাই রেগে গেছে)
আমিঃনা থাক তা করতে হবে না। আমি এমনি চলে যাবো
ম্যামঃ……….

(আসলেই সময় যখন খারাপ যাই তখন সব
দিক থেকে খারাপ যাই। উপরে যে ম্যামের সাথে কথা হলো সে আর কেউ না আমার
এক্স গার্লফ্রেন্ড মিমি। আপনার হইত ভাবছেন কেন আমার সাথে মিস বিহেব করল….? এখন বাড়িতে যেতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট লাগবে এই ফাকে গল্পটা বলি কেমন…? শুনুন তাহলে

আজ থেকে ৫ বছর আগের ঘটনা। ফাস্ট ইয়ারে যখন পড়তাম সেইদিন কলেজে মাঠে বসে গান গাইছিলাম এমন সময়

আমিঃএক সুন্দরী মাইয়া আমার মন নিলো কারিয়া পারো যদি তোমরা তারে দাও গো আনিয়া
অচেনা মেয়েঃএই যে মিস্টার
আমিঃজ্বী আমাকে বলছেন(মুগ্ধ নয়নে তাকিয়েছি)

অচেনা মেয়েঃহ্যা আপনাকেই বলছি
আমিঃহ্যা বলুন(কল্পনা ও করতে পারি নাই এত সুন্দরী একটা মেয়ে আমার সাথে কথা বলবে)
অচেনা মেয়েঃবলছিলাম ফাস্ট ইয়ারদের ক্লাসরুমটা কোথাই
আমিঃঅহহ আপনি কি নতুন এই কলেজে(এইরে এতো আমাদের সেম ইয়ার! যাক ভালোই হইছে)
অচেনা মেয়েঃহ্যা কেন
আমিঃনা এমনি বলছিলাম আর কি..? আপনার নাম জানতে পারি
অচেনা মেয়েঃআগে বলুন আপনি কি জানেন না এমনি আমার সময় নষ্ট করছেন
আমিঃকি যে বলেন না আমি তো এই কলেজে সভাপতি আর আমি জানব না তা কি হই(ভাব দেখিয়ে)
অচেনা মেয়েঃঅহহ সরি আমি আপনাকে চিনতে পারি নাই
আমিঃআপনি হইত প্রথমে আমাকে চিনতে পারেন নাই। কোনো ব্যাপার না পরে আমার সম্পর্কে সব জানতে পারবেন(পাম মেরে)
অচেনা মেয়েঃআমি বরং অন্যজনের কাছে জেনে নিব… আসি।
আমিঃআপনি যখন প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন তো আমিই বলছি শুনুন
অচেনা মেয়েঃআচ্ছা বলুন
আমিঃপ্রথমে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠবেন তারপর দেখবেন ১০ নাম্বার কক্ষ সেটাতে ভুলে যাবেন না
অচেনা মেয়েঃকেন(অবাক হয়ে)
আমিঃকারন সে রুম তো বন্ধই থাকে
অচেনা মেয়েঃঅহহ তারপর
আমিঃতারপর ১০ পা এগিয়ে বামে যেয়ে যে ক্লাসরুমটা পাবেন সেটা ফাস্ট ইয়ারদের জন্য (মিথ্যা বলে দিলাম)
অচেনা মেয়েঃ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

আমিঃধন্যাবাদ দিতে হবে না। আমার তো এটা দায়িত্ব
অচেনা মেয়েঃওকে আসি এবার(বলে চলে গেলো ক্লাসরুমে)

আশরাফঃ আরে বন্ধু তোমার ভাব সাভাব তো একদম ভালো লাগছে না
আমিঃআহহ আজ পুরোদিন্টাই ভালো যাইব রে(খুশি হয়ে)
আশরাফঃহুমম দেখলামি তো অচেনা মেয়ের সাথে টাক্কি মারো
আমিঃআরে বেডা চুপ থাক সবসময়ই বেশি কথা বলিস
আশরাফঃহুমম তবে মাল্টা ভালোই ছিলো
আমিঃআশরাফ ওকে আরেক বার যদি মাল বলিস তো তোকে মেরে ভুত বানাব(রেগে)
আশরাফঃআরে মামা তুই এত রেগে যাচ্ছিস কেন রাস্তায় কতজনকেই না বলিস
আমিঃদেখ আশরাফ আমাকে রাগাস কিন্তু
আশরাফঃ ওকে মাল বলেছি তো তোর এত ফাটছে কেন
আমিঃকারন ওই তোর ভাবি মানে আমার হবু বউ
আশরাফঃ অহহ এই কথা
আমিঃজ্বী হ্যা আশা করছি এমন উল্টো পাল্টা কথা আর বলবেন না
আশরাফঃ সরি বন্ধু ভুলে হয়ে গেছে। চল ক্লাসরুমে যাই
আমিঃওকে চল

তারপর ক্লাসরুমে গেলাম কিছুক্ষন পর নেহা আসলো

নেহাঃরনি তুই মিমিকে মিথ্যা কথা বলছস কেন
আমিঃআমি তো মিমি নামে কাউকে চিনি না
নেহাঃআচ্ছা দাড়া চেনাচ্ছি তোকে(বলে সেই অচেনা মেয়ে কে ডাক দিলো)

নেহাঃমিমি এই ছেলেটি তোর সাথে মিথ্যা কথা বলছে না
মিমিঃহ্যা এনি তো আমাকে মিথ্যা কথা পুরো কলেজ রুম ঘুরিয়েছে এবং শেষে কিনা দপ্তর মামার রুম দেখিয়েছে।

আর বলে কি না এই কলেজে সভাপতি সে

আমিঃআপনার কোথাও ভুল হচ্ছে(এইরে ধরা খেয়ে গেলাম)
নেহাঃআজ স্যার কাছে বিচার দিব তুই অচেনা মেয়ের সাথে ফ্র‍্যালাট করছিস
আমিঃনেহা এসব কথা নিজেরদের মধ্যেই মেটানোই ভালো না(এইরে সরেছে যদি স্যারের কাছে বিছার দেয় তাহলে তো সবার সামনে কান ধরে দার করিয়ে রাখবে)

নেহাঃচল মিমি(ক্লাস রুমে চলে গেলো)
আমিঃনেহা শুন(না শুনেই চলে গেলো যাক তাহলে মেয়েটার নাম তো জানতে পারছি)

কিছুক্ষণ পর আমি ক্লাসরুমে গেলাম
বেঞ্চে বসে গান গাচ্ছিলাম আর মিমি শুধু বাকা চোখে দেখছিল।তারপর স্যার ক্লাসরুমে প্রবেশ কর

ছাত্রছাত্রীঃআসসালামু­­­ ওয়ালাইকুম
স্যারঃওয়ালাইকুম আজসালাম বসো সবাই
স্যারঃতোমরা সবাই কেমন আছো..
ছাত্রছাত্রীঃভালো স্যার
স্যারঃতোমাদের এখানে মিমি আসছে
নেহা দাড়িয়েঃজ্বী স্যার মিমি আসছে
স্যারঃমিমি
মিমিঃজ্বী স্যা

নতুন ভিডিও গল্প!

স্যারঃতোমার পরিচয়টা সবাইকে দাও কারণ তুমি এই কলেজে নতুন আসছো
মিমিঃআমার নাম মিমি এবার ফাস্ট ইয়ারে জয়েন হলাম। বাবা রাজ গ্রুপ অফ ইনঃ এর মালিক। এখানে ইন্টারমিডিয়েট কোমপিলিট পযন্ত থাকব ।
স্যারঃআচ্ছা মিমি তুমি বসো। আজ কোন অধ্যায় পড়া ছিলো…..?
নেহাঃস্যার তার আগে আমার কিছু নালিশ আছে

স্যারঃকি নালিশ
নেহাঃস্যার রনি দিন দিন ফাজিল হয়ে যাচ্ছে
আমিঃ(যা ভেবেছিলাম তাই হলো)
স্যারঃকি করেছে ও
নেহাঃস্যার মিমি তো এই কলেজে নতুন আসছে তো রনিকে জিজ্ঞেস করছিলো যে ফাস্ট ইয়ারদের ক্লাসরুম কোনটা তারপর রনি মিমিকে মিথ্যা বলে পুরো কলেক রুম ঘুরিয়েছে আর বলে নাকি সে এই কলেজে সভাপতি তার কথায় নাকি পুরো কলেজ চলে
স্যারঃকি… রনি এসব বলছে
নেহাঃহ্যা স্যার
স্যারঃমিমি… নেহা যা বলছে তা কি সত্যিই
মিমিঃজ্বি স্যার
স্যারঃএই রনি কই তুই
আমিঃপেজেন স্যার(হাত তুলে)
স্যারঃকি শুনলাম এসব
আমিঃকি স্যার(বুঝেও না বুঝার ভান)
স্যারঃনেহা আর মিমি যা বলল
আমিঃনাউজুবিল্লাহ… এসব কথা আমার শুনতে হবে আমার জানা ছিলো না
নেহাঃদেখেছেন স্যার কেমন সাধু সাজছে
আমিঃনেহা বড়দের মাঝে কথা বলতে নেই
স্যারঃচুপ আরেকটিও কথা না কান ধর
আমিঃনেহা স্যার কি বলছে শুনতে পাচ্ছিস না স্যার কানে ধরতে বলছে
নেহাঃকি আমি কান ধরব
স্যারঃনেহা তুমি বসো আমি দেখছি। রনি….
আমিঃজী স্যার বলুন
স্যারঃবাবা তোমার হাত দুইটো উপরে তুলো
আমিঃকেন স্যার
স্যারঃযা বলছি তাই কর(ক্লাসের সবাই দেখছে আর হাসাহাসি করছে)
আমিঃজ্বী স্যার হাত উপরে তুলেছি
স্যারঃএখান এক পা উচ্চো করে
কান ধরে দাড়িয়ে থাকো ১০ মিনিট

আমিঃস্যার ওরা তো মিথ্যা কথা বলছে
স্যারঃচুপ যা বলছি তাই কর

আমিঃ(তারপর আর কি তখন মিমির সাথে মিথ্যা কথা বলার জন্য কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে)

১০ মিনিট পর

আমিঃস্যার ১০ মিনিট তো হয়েছে এবার কান্টা ছেড়ে দেই
স্যারঃতোমরা সবাই কি বলো কান ছাড়তে বলব
ছাত্রছাত্রীঃস্যার তার আগে রনির কাছ থেকে গান শুনব সে ভালো গাইতে পারে
স্যারঃগান গাইতে পারিস
আমিঃজ্বী একটু একটু পারি
স্যারঃআচ্ছা ঠিক আছে একটা গান গাইবি তারপর তোর বেঞ্চে বসতে পারবি
আমিঃস্যার গান না বললে হই না
স্যারঃশাস্তি ডাবল করব
আমিঃনা থাক বলছি(হঠাৎ মিমিকে লক্ষ্য করলাম মিমি হাসছে)

তারপর গান গাইতে শুরু করলাম

কেন এই পিঞ্জিরাতে তোমার বসতি….
কেন এই পিঞ্জিরারের সনে তোমার পিরিতি…

আশা যাওয়া দিবারাত্রি ঘরে…..বাহিরে..
তোমারে.. পুশিলাম কত আদরে…..

তুমি আমার আমি তুমার এই আশা করে..
তোমারে পুশিলাম কত আদরে….

তোমার ভাবনায় আমি ভাবি নিশিদিন

দিনে দিনে পিঞ্জিরা মোর হইল মলিন

কে শুনাবে মধুর বলি বলো আমারে…..

তোমারে পুশিলাম কত আদরে

বাউল আব্দুর করিম বলে তোমারে বলি

তুমি চলে গেলে হবে মোর পিঞ্জিরা খালি

কে শুনাবে মধুর বলি বলো আমারে

তোমারে পুশিলাম কত আদরে
আমার মাটির ও পিঞ্জিরা পুশা ময়না রে তোমারে পুশিলাম কত আদরে(গান শেষে সবাই করা হাত তালি দিয়ে উৎস দিলো)

স্যারঃভালো তো গান পারিস
আমিঃজ্বী স্যার এবার বেঞ্চে গিয়ে বসি
স্যারঃআচ্ছা যা(হাসি দিয়ে)

আমিঃ(কি ব্যাপার মিমি কেন জানি আমার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে)

অইদিনের ক্লাস্টা অইভাবেই কেটে গেলো

[চলবে…]


Tags: , , , ,

Comments are closed here.