শালিকা যখন বউ (পর্ব-০৭)

December 28, 2020 | By Admin | Filed in: প্রেমকাব্য.

শালিকা যখন বউ (পর্ব-০৬)

-রিশা:আমি বলছি তো আমি ইচ্ছা করে ধাক্কা দেয়নি(কাঁদার মতো করে)

-আমি:আমি জানি ছাড়ো আমাকে(রেগে)

-রিশা:তাহলে কেন এমন করছেন??

-আমি:কিই করছি আমি??

-রিশা:এই যে আমার সাথে এমন করে কথা বলছেন কেন??

-আমি:এমনি কথা বলতে ভালো লাগছে না ছাড়ো আমাকে।

এইবলে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসছিলাম রিশা এসে আমার সামনে ড়াদালো

-রিশা:দেখুন আমি বুঝতে পারছি যে আমি তখন কিস করতে দেয়নি বলে আপনি আমার সাথে এমন করছেন তাই না।

-আমি:নাহ সড়ো সামন থেকে(বিরক্তি কর ভাবে)

-রিশা: দাড়ান আসলে প্রথম বার তাই তখন কেমন জানি ভয় ভয় আর লজ্জা লাগছিল তাই অমন করেছি। আপনি চাইলে এখন আমায় কিস করতে পারেন।

বাচ্চাদের মতো করে বলেই লজ্জিত ভাবে মাথা নিছু করে দাড়িয়ে রইলো রিশা।

-আমি:তুমি কি চাও আমি বাসা থেকে বেড়িয়ে যাই(রেগে)

-রিশা:না আমি সেটা চাবো কেন??(হতাস হয়ে)

-আমি:তাহলে সামন থেকে সড়ো।

-রিশাকেঁদে কেঁদে)আমি বলছি তো আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়নি। শুধু একটা ভূলের জন্য আপনি আমার উপর এতরাগ করে আছেন। আমার জন্য বাসা থেকে বেড়িয়ে যেতে চাইছেন।থাক আপনাকে কোথাও যেতে হবেনা। আমি-ই কালকে আমার বাপের বাড়িতে চলে যাব বলে দিলাম।

এইবলে রিশা বাচ্চাদের মতো কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। প্রেম,ভালোবাসা,রাগ,অভিমান,মনে হচ্ছে এখন কিছুটা হলেও রিশা বুঝতে পারছে। রুমে এসে দেখি রিশা সুয়ে সুয়ে কাঁদছে বাচ্চাদের মতো করে। আমাকে দেখে রিশা আরো একটু বেশি কাঁদতে লাগলো। কাঁদুক এখনো কিছুই বলবো না। আমি কিছু না বলে একটু ভাব নিয়ে তার পাশে সুয়ে পড়লাম।

-রিশাকেঁদে কেঁদে)এখানে আমাকে কেউই ভালোবাসে না তখন আপনি আমায় বকেছেন আর এখন আপনি আমার উপর রেগে আছেন। আমি একটা বাচ্চা মেয়ে কিছু বুঝিনা বলে সবাই আমাকে রাগ দেখায়। থাকবো না আমি কালিই চলে যাব থাকবো না আপনাদের বাসায়।

এইসব বলছে আর বাচ্চাদের মতো করে কাঁদছে রিশা। আমি শুনছি আর মনে মনে হাসছি ওর কথা শুনে। সত্যি রিশা এখনো একটা বাচ্চা মেয়ের মতোই পাগলী একটা। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি রিশা পাশে নেই। ৯টা বাজে কিন্তু আজকে আমায় ডেকে দিল না কেন রিশা। কি ব্যাপার সত্যি চলে গেছে নাকি। ধুর কি সব ভাবছি মনে হয় এখনো আমার অভিমান করে আছে তাই ডাকেনি। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছি কিন্তু এখনো রিশা রুমে এলো না। কিছুক্ষন পর রিশা গাল ফুলা মুখ নিয়ে রুমে এলো দেখে মনে হচ্ছে অনেকটাই অভিমাম করে আছে আমার উপর।

-রিশা:এইনিন আপনার চাঁ(মন খারাপ করে)

আমি কিছু না বলে চাঁয়ের কাপটা হতে নিলাম। এরপর রিশা একটা ব্যাক হাতে নিয়ে

-রিশাবাচ্চাদের মতো করে)থাকবো না আমি এখানে সবাই নিজেকে কি মনে করে কে জানে। আমার সাথে কেউই ভালো করে কথা বলে না। কেন থাকবো আমি এখানে(নিজের কাপড় ব্যাগে ঢুকাতে ঢুকাতে)।

ও মনে করেছে আমি ওকে আটকাবো। কিন্তু না ওকে আমি একটু অন্যরকম ভাবে শাস্তি দিব। এরপর ব্যাগটা হাতে নিয়ে

-রিশা:থাকবো না এখানে বাপের বাড়ি চলে যাব আমি এইবলে দরজার কাছে গিয়ে থেমে গেল রিশা।

ও মনে করেছে আমি বাধা দিব। আমি ওকে দেখেও না দেখার ভান করে রেডি হচ্ছিলাম। আমার দিকে ঘুড়ে রিশা –

-রিশা:চলে যাচ্ছি আমি(জোরে জোরে)

-আমি:আরে যাও তো যাও(বিরক্ত কর মতো করে)

-রিশা:হুম গেলাম আমি এইবলে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে করতে বেড় হয়ে গেল রিশা। যাক চলে একটু শিক্ষা দিতে হবে রিশাকে। দেখি কতদূর যেতে পারে ও। সারাদিন চলে গেল কিন্তু রিশা আমাকে একটি বারের জন্যেও ফোন করেনি। আমিও আর ওকে ফোন দেয়নি মায়ের কাছে ফোন নেই বাবাকে ফোনে করে বলেছে ও নাকি বাসায় পৌঁছেছে।

অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে রুমে আসলাম। রাতে একা একা রুমে ভালো লাগছে না। কেন জানি রিশার কথা খুব মনে করছে। খুব মিস করছি তাকে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ওর সাথে ঝগড়া হতো শুয়া নিয়ে। আমি যেন একহাত দূরে থাকি। সারাদিন গেল কিন্তু ও আমার একবারও ফোন করলো না। ধুর কিছুই ভালো লাগছে না।

দুইদিন হলো কিন্তু রিশার কোন খবর নেই। একদিন হটাৎ বাড়িতে একটা চিঠি এলো। মায়ের নাম এ।

-আমি:মা তোমার নাম এ চিঠি এসেছে।

-মা:দেখ কি লেখা আমি রান্না করছি(রান্না ঘর থেকে)
কে জানে মাকে আবার কে চিঠি পাঠাবে। আর কিছু না ভেবে চিঠিটা খুলে পড়তে লাগলাম।

——চিঠি——–

“প্রিয় শাশুড়ি আম্মা” ,

পত্রের প্রথমেই আমার সালাম গ্রহণ করবেন। আশা করি ভালো আছেন। আমিও ভালোই ইক্টু ইক্টু। বেশি বেশি ভালো থাকার জন্য আপনার সহজ সরল খরগোসের বাচ্চার মতো কিউত ছেলেটাকে আমার চাই। ভোরবেলায় হাঁটতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। ভরদুপুরে বাসায় ফেরার সময় এক প্যাকেট চিপ্স কিনে দেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই! সন্ধ্যায় ঝুম বৃষ্টিতে হাত ধরে ভেজার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই! মাঝরাতে ঘুম ভেঙে হঠাৎ আইসক্রিম কিনে দেওয়ার বায়না করার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপের সময় ধরে চড় থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। কন্ট্রোল করতে না পারা রাগটা যখন অভিমানে পরিনত হয়ে চোখ দিয়ে বের হয়ে গাল বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়বে তখন আমার কপালে চুমু দিয়ে চোখ মুছে দেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকেই চাই। অকারন মন খারাপের সময় ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদার সময় জোর করে বুকে টেনে নেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। যেদিন শাড়ি পড়ে সাজুগুজু করবো ওইদিন ঘরের সব কাজ করানোর জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। রোজ রাতে চুলে তেল দিয়ে বিনুনি করে দেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। রান্নাঘর থেকে ঘেমে একাকার হয়ে বের হওয়ার পরে ফুউউ দেওয়ার জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। একটা পাগল পাগল জীবন কাটানোর জন্য হলেও আপনার ছেলেকে চাই। একটা পাগল পাগল জীবন কাটিয়ে বুড়ো হয়ে হসপিটালের একিই কেবিনে একিই বেডে আপনার ছেলের বুকে মাথা রেখে মরে যাওয়ার জন্য আপনার ছেলেকে খুব করে চাই। ভালোয় ভালোয় ছেলেকে দিলে ভালো নাহয় বাসায় এসে কলার ধরে তুলে নিয়ে আসবো।
ইতি
আপনার হবু বউমা মুক্তি।

চলবে……


Tags: , , , , , ,

Comments are closed here.