বিরাজের নতুন অধ্যায় – ০২

January 13, 2021 | By Admin | Filed in: চটি কাব্য.

 

অন্য দিকে বিরাজও ভয়ে কিছু না করে বিছানায় শুয়ে রইল। রাতে পুরো ঘুম হয়নি বড়জোর তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছিল। তাই দোটানায় পড়ে তার চোখেও ঘুম চলে এলো।

পুরোটা দিন কেটে গেল। বরাবর পাঁচ ঘন্টার ঘুম দিয়ে উঠলো রিনি। বিকেল চারটা বাজে আরো তের মিনিট। রিনি ঘুম থেকে উঠে এখন একদম শান্ত। এখন ব্যাপারটা নিজের কাছেই খারাপ লাগছে৷ যতটা বাজে ভাবে রিয়েক্ট করলো এতটা বাজে কিছু ছিলই না। বরং বাজে কিছুই ছিলই না। সকালের ঘটনাটা তো ছেলেটা কিছুই জানেনা, নিজেইতো মালশিটা অযথা উঠাতে গিয়েছে আর নিজেইতো ছেলেটার সাথে ঘা ঘেঁষে বসলো ওই সময়, ছবি দেখাতে গিয়েই ভুলে হাত লেগে গেছে, সরিও বলেছে, তার উপরে নিজের জিনিস গুলোইতো বড়বড় দুটো তাল, ভুলে হাত বাত লাগতেই পারে, এটা তার জন্য নতুন কিছু না। তারপরও কেন যে, বিনা কারণে সে একা ঘরে পিচ্চি ছেলেটার সাথে এতবড় অন্যায় করেছে। তার উপরে প্রথমবার বেড়াতে এসেছে ছেলেটা আর এবারই তাকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে নিজের ইনসিকিউরিটির কারণে, সত্যিই খুব অন্যায় হয়ে গেছে।

রিনির ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল। বিকাল পাঁচটা বাজতে যাচ্ছে। পুরোটা দিন ছেলেটা না খেয়ে আছে, রান্নাও করেনি, তার উপরে একা ঘরে ছেলেটাকে একা ফেলে রেখে দরজা বন্ধ করে রুমে বসে আছে। কতবড় স্বার্থপর সে।

রিনি অলমোস্ট তড়িঘড়ি করে স্মৃতির রুমের ঢুকলো। দেখলো ছেলেটা ছোট্ট শিশুর মতো জড়ো হয়ে ঘুমাচ্ছে। চেহারার দিকে তাকিয়ে রিনির খুবই খারাপ লাগলো। পুরোটা দিন না খেয়ে, তার ভয়ে ঘুমিয়ে গেল৷

সত্যি সত্যি এবার রিনির ভীষন মায়া ভেসে এলো। রিনি তারাতারি খাবারের জন্য কোথায় ফোন করে বিরাজকে তুলতে গেল।

রিনি বিরাজকে ঢেকে তুললো, বিরাজ সবার আগে উঠতেই আবার “সরি” বলতে লাগলো।

” সরি আন্টি আমি আসলেই খেয়াল করিনি আপনার গায়ে হাত লেগে গেল। ওতো আমি স্মৃতি আপুর ছবি দেখাতে চেয়েছিলাম। প্লিজ আপনি ভাবিকে কি বলবেন না৷ ও রাগ করলে মানাতে পারিনা। প্লিজ ”

রিনি জানে সব ভুল নিজেরই। তাই কোন উওরই দিতে পারলো না। তার কাছে এর কোন উওর নেই। তার উপরে ছেলেটার কথাগুলো এতটাই হৃদয়স্পর্শী যে একসময়ে তার ছেলে সন্তান নেয়ার খুব ইচ্ছেটাকে মনে করিয়ে দিল।

( আসলে রিনি আর তার বেস্টফ্রেন্ড় মিলির ইচ্ছে ছিল তারা দুইজনের একজন একটা ছেলে আর অন্যজন একটা মেয়ে জন্ম দিবে। তারপর তাদের বন্ধুত্বকে পরিবারে গঠিত করবে। তাই তারা বিয়ের পরে একসাথে একই বিল্ডিংয়ে থাকা শুরু করে। কিন্তু দুইজনেরই দুটো মেয়ে সন্তান হয়, মিশু আর স্মৃতি। তবে এতে তারা আরো খুশি হয়, কারণ তারাও পাশাপাশি পরিবারের বেস্টফ্রেন্ড় ছিলো। তাই তারা নিজেরা দুজনেই স্টেরালাইজেন করিয়ে নেয়, কারণ তারা আর কোন সন্তান চায় না। কিন্তু রিনির মনে একটা ছেলে সন্তানের ইচ্ছে ছিল প্রচুর। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। হবেও না।)

তাই রিনি ছেলেটাকে দেখে হৃদয় থেকে নিজের বাচ্চা বলে ঢাকতে ইচ্ছে করছে। তাই নিজের ভুল দূর করতে আর ক্ষমা চাইতে সব ভুলে গিয়ে মায়ের আদরে বিরাজকে বুকে টেনে নিলো।

” সরি বলে লজ্জা দিয়ো না আব্বু, আমিই বিনা কারণে তোমার সাথে এমন আচরণ করলাম। প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও ”

এতক্ষণে গিয়ে বিরাজ রিনিকে জড়িয়ে ধরে হাগটা কমপ্লিট করলো। রিনিও এমন আচরণ দেখে মনটা ভরে গেল। রিনি যেন নিজের ছেলেকে পেয়ে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। এখন ছেলেটার মুখ যে তার সেই তাম্বুরায় পুরো ঢুকে গেলো তাতেও তার কোন আপত্তি নেই।

অনেকক্ষণ পার হয়ে গেল। রিনির বিরাজকে ছাড়ার খেয়ালই এলো না। তার বুকে এতক্ষণে অপরাধের ছায়া সরে গিয়ে নিজের কাছেই হালকা লাগছে। বিরাজও খুব উষ্ম ফিল করছে। তার যে কি ভালো লাগছে তা বলে বুঝাতে পারবে না।

টিং টং…. টিং টং…. ( তার মধ্য কলিং বেল বেজে উঠলো )

এতক্ষণে গিয়ে রিনির হোশ ফিরে এলো৷ ও বিরাজকে ছেড়ে দিয়ে তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নিতে বললো।

” তুমি তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নাও খেয়ে দেয়ে আমরা বোটানি গার্ডেনে ঘুরতে যাব! ” রিনি দরজা খুলতে চলে গেল।

বিরাজ ঘুরতে বা বাইরে যেতে তেমনটা পছন্দ করে না কারণ সে ইন্টোভার্ট পার্সন। তবুও কেন জানি আজ ওর মনটা উড়ো দিয়ে উঠলো। আন্টি নিজেই ভুল বুঝতে পারল হয়তো তার জন্যই হবে। আর এত হট আর সেক্সি আন্টির সাথে কে না ঘুরতে যায়।

রিনি বিরাজ দুজনেই আলাদা আলাদা গোসল সেরে একসাথে খেতে বসলো৷ রিনি খাবার অর্ড়ার করেছে তাই দিতে বেল বাজলো তখন। এখন রিনির খুব খুব মায়া জেগেছে বিরাজের উপর তা বুঝতে বাকি রইল না বিরাজের। রিনি আজ সামনের চেয়ারে না বসে ওর পাশের চেয়ারটায় বসে বিরাজকে নিজের হাতে লোকমা খাইয়ে দিতে আবদার করলো।

বিরাজ না করলেও কে মানে কার কথা। তবে বিরাজের জন্য লোকমা খাইয়ে দেওয়া প্রতিদিনের কথা। তার আম্মু আর তার প্রিয় ভাবি তাকে প্রায় সময় লোকমা ধরে খাইয়ে দেয়।

রিনি ওকে খুব আদর করে খাইয়ে দিলো। আর একই প্লেটে নিজেও খেয়ে নিল।

” তৈরি হয়ে নাও আমরা এখনই বের হবো ” বলে রিনি তৈরি হতে চলে গেল।

দু’জনে তৈরি হয়ে নিলো। বিরাজ থ্রি কোয়াটার প্যান্ট একটা টিশার্ট আর একজোড়া সাদা স্নিকারস পরলো। আর রিনি ওরেন্জ কালারের একটা লংগ কুর্তি পরলো, পায়ে ওয়াকিং স্নিকারস, চুলগুলো খোলা আর ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপিস্টিক। ভীষণ সুন্দর লাগছে রিনিকে।

বিরাজ তবে তাকে সুন্দর লাগছে এমন কিছু বললো না।

” খুব কিউট লাগছো আব্বু ”

” 😊😊😊😊😊 Thank You ”

রিনি জানে বিরাজ তাকে বলবে না ওকে কেমন লাগছে, সকালের ঘটনার পরে, তাই নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করল:- কেমন লাগছি এই পোশাকে?

” সুন্দর লাগছেন আন্টি ” বিরাজ সাধারণ ভাবে বললো।

রিনি বুঝলো ছেলেটার ভয় কাটেনি তাকেই ভয় কাটিয়ে তুলতে হবে।

” বাস খালি সুন্দর! আচ্ছা যদি আমি না হয়ে স্মৃতি বা মিশু হতো তাহলে কি বলতে? ” রিনি এমনটা বলতে চাইছিলো না। তবুও তার মন মানছিল না তাই সে জিজ্ঞেস করেই ফেললো।

বিরাজ কথাটা শুনে একটু দোটানায় পড়লো। ভাবিকে তো বলতো তোমাকে এখনই জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে আর স্মৃতি আপু হলে তাকে সে খুব কিউট বা সেক্সি লাগছে বলতো। কিন্তু আন্টিকে কি বলবে তাই খুঁজে পাচ্ছে না!

” ভয় পেওনা আমি কিচ্ছু মনে করবো না তুমি মনের কথা বল! ”

” আপনাকে খুব কিউট লাগছ


Tags: , , ,

Comments are closed here.