সিনিয়র আপু যখন বউ (পর্ব-২১)

December 31, 2020 | By Admin | Filed in: চটি কাব্য, সিনিয়র আপু যখন বউ.

সিনিয়র আপু যখন বউ (পর্ব-২০)

★আমি আপুর কথা মতো আমার বন্ধু সাগর কে থাপ্পর দিতে যাব,,, পিছন থেকে কে জানে আমার হাত টেনে ধরেছে,,,, আমি মনে করেছি আপু আমার হাত টেনে ধরেছে,,,, আমি পিছনে ঘুরে অবাক হয়ে গেলাম,,,, কারন আমার হাত পিছন থেকে টেনে ধরেছে আমার ক্লাসমেট ফারিয়া?

ফারিয়া মনে মনে আমাকে পছন্দ করে,,, সেটা আমি জানি কিন্তু আমার হাত টেনে ধরল কেন?

★ আমি আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি আপু তেলে বেগে আগুন হয়ে আমাদের দিকে আসছে,,, আমি ফারিয়ার হাতটা সরিয়ে ভদ্র ছেলের মত দাঁড়িয়ে রইলাম,,,,

★ এরমধ্যে ফারিয়া আমার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়েছে,,, আর বলল এ চিরকুটটা আমার বন্ধু মিশালকে দেওয়ার জন্য,,, আপু যে তেলে বেগে আগুন হয় এদিকে আসছে ফারিয়ার সেদিকে খেয়াল নাই,,,, আমার হাতে চিরকুট টা দিয়ে চলে যাচ্ছে?

আমি চিরকুটটা খুলে পড়তে যাব,,, এরমধ্যে আপু এসে আমার হাত থেকে টান দিয়ে চিরকুট টা নিয়ে নিল,,,, তারপর কিছু সময় ধরে চিরকুট টা পড়লো,,,, আমি আপুর দিকে খেয়াল করে দেখি,,, তার চোখে পানি এবং চেহারা রাগে কটমট করছে,,,, হঠাৎ করে আমি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার দুগালে ঠাসস ঠাসসসস,, দুটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল,,, আর বলতে লাগলো বেইমান তোকে আমি এই বিশ্বাস করেছিলাম,,,, কি অপরাধ ছিল আমার,,,, কেন এমনটা করলি,,, আমার সরলা ভালোবাসা আর অসম্ভব বিশ্বাসকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিলি,,, তুই এমন টা করতে পারলি””” আমি তো বিশ্বাস করতে পারতেছি না,,, তুই আমার হাজারো দেখা স্বপ্ন,, আর আমার অবিরাম অফুরন্ত ভালোবাসার ছলনা করলি,,,, তুই তলে তলে ওর সাথে এতটুকু এগিয়ে গেছিস,,,, তুই আমাকে বলতি তুই ওকে পছন্দ করিস,,, তাহলে আমার মনকে আমি হাজার বুঝিয়ে তোর কাছ থেকে ফিরিয়ে রাখতাম,,,,

★ একনাগাড়ে কথা গুলো বলতে লাগলো আর কান্না করতে লাগল,,, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,,, আমি কার সাথে তোলে তোলে এতটুকু এগিয়ে গেলাম,,, আমি তার সাথে কোন সময় প্রেমের ছলনা করলাম,, কিছুই বুঝতেছি না?

★ আপু কান্না করতে করতে চিরকুটা দিল মেরে ফেলে দৌড়ে চলে যাচ্ছে,,,, আমি তার পিছনে পিছনে দৌড়ে যেতে লাগলাম,,, তারপর আমি তার হাত ধরে টান দিলাম বললাম কি হয়েছে,,,,, আমি আবার কি করেছি,,,, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,,, তুমি কান্না করছো কেন আর আমাকে এখানে ফেলে চলে যাচ্ছো কেন।।।

আপু এক ঝটকায় তার হাতটা সরিয়ে নিল আর বলতে লাগলো,,, বেইমান তুই আর আমার হাত ধরবি না,,, আমার সাথে কোন ভাবে যোগাযোগ করবি না,,, আর আমাদের বাসায় যাবি না,,,, তা না হলে আমি উল্টাপাল্টা কিছু করে বসবো???

(আমি) আরে কি হয়েছে বলবে তো??
(আপু) আমার সাথে নাটক করিস,,, আরেক মেয়ের সাথে সব কিছু করে,,, আমার সাথে কেন প্রেমের নামে ছলনা করলি,,,, তুই আর কোনদিন আমার সাথে যোগাযোগ করবি না,, এ কথা বলে আপু চলে যাচ্ছে,,, আমি আবারো যেয়ে তার হাত ধরলাম,,, সাথে সাথে আরো দুইটা থাপ্পড় দিল,,

আমি গালে হাত দিয়ে তাকে বললাম কেন এমন করছো? কার সাথে কি করেছি সেটা তো আগে বলবা?
(আপু) আমি কিছু বলতে পারব না,,, তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না বলে দিলাম,,,, আর আমার পিছনে পিছনে আসবি না,,, যদি আসিস তাহলে এখনই আমি গাড়ির নিচে ঝাঁপ দিব।

  • আমি আর কিছু না বলে গালে হাত দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম,, আপু কান্না করতে করতে চলে যাচ্ছে,,, হঠাৎ করে মনে হলো চিরকুটের কথা,, আমি দৌড়ে কলেজের ভিতরে ঢুকলাম এবং চিরকুট টা খুঁজে বের করলাম,,, তারপর পড়তে লাগলাম,,, তাতে লেখা হে রাজকুমার তুমি যেদিন বর্ষার বৃষ্টির দিনে আমাদের বারান্দায় এসেছিলে,,, সেদিন তোমার দু চোখে আমি আমার জন্য জমানো হাজার সহস্ত্র আবেগ
    আর ভালোবাসা দেখেছি,,, সেদিন আমি বিজলী চমকানো ভয় তোমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম,,, সেদিন অজানা এক ভালো লাগা আমাকে চতুর পাশ থেকে ঘিরে ধরে ছিল,,, তার কিছুদিন পরে কলেজের সিঁড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে তোমার সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনই গড়িয়ে গড়িয়ে যখন তোমার উপরে আমি পড়লাম,,, কিছু সময়ের জন্য যে তোমার ঠোঁট আমার ঠোঁট দুজনের অজান্তে এক হয়ে গিয়েছিল,,, তখন এক অদ্ভুত অনুভূতি মনে শিহরণ তুলেছিল,,, তারপর থেকে তুমি আমাকে সব সময় ফলো করতে,,, আমিও তোমাকে সবসময়ই খিয়াল করতাম,,,, আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো,,, আমিও তোমাকে আমার মনের অজান্তে ভালোবেসে ফেলেছি,,, তুমি এত বোকা কেন রাজকুমার,,,, যাকে ভালোবাসো তাকে কি মুখ ফুটে বলা যায় না,,, আমি মেয়ে মানুষ হয়ে কিভাবে তোমাকে আগে বলি,,,, তাই তোমাকে চিরকুট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিলাম,,,, আমি তোমাকে ভালোবাসি,,,
    ইতি। রাজকুমারী ফারিয়া?

★ আমি এতক্ষণে বুঝতে পেরেছি আপু কেন উল্টা পাল্টা বকে চলে গেল,,,, ফারিয়া বিশাল কে ভালোবাসে,,, আমাকে তো বলল চিরকুট টা মিশালকে দেওয়ার জন্য??? আর আমার শাকচুন্নি আমাকে ভুল বুঝে কতগুলো কথা বলে গেল,,,আর ভুল বুঝার ও কারণ আছে,,,কারণ ভার্সিটিতে আমার বন্ধুরা প্রায়ই,, আমাকে
রাজকুমার বলে ডাকে,,,আর ফারিয়া চিরকুটেতে রাজকুমার উল্লেখ করেছে,,,

এখন আমি কি করবো?আমি যে তার সাথে কথা না বলে থাকতে পারবো না,,,, এই কিছুদিনের ভিতর যে আমার হৃদয় আত্মার সাথে মিশে গিয়েছে।

মিশালকে ফোন দিলাম,,, বললাম আগামী পাঁচ মিনিটের মধ্যে ক্যান্টিনে আয়,,,, ২ ৩ মিনিটের মধ্যে মিশাল আসলো,,,, আমি ওকে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম,,, তুই বৃষ্টির দিনে ফারিয়ার সাথে এরকম এরকম কাজ করেছিস,,,, ও হ্যা বলল?

★ আমি ওকে বললাম তুই কি ফারিয়াকে ভালবাসিস,,,

(বন্ধু) হ্যাঁ বাসি?

(আমি)ফারিয়া তোকে লাভ লেটার দিয়েছে।

সত্যি বলছিস দোস্ত,,,,

(আমি)হ্যা এই নে তোর লাভ লেটার।

থ্যাংক ইউ দোস্ত আমি এই দিনের ওই অপেক্ষায় ছিলাম,,, তুই আজকে যা চাইবি তাই খাওয়াবো,,,, আমি কিছু বললাম না,, চুপ করে বসে আছি,,,, অন্য কোন সময় বললে হয়তো ওকে নিয়ে 3-4 হাজার টাকা রেস্টুরেন্টে বিল তুলতাম ,,,, কিন্তু আজকে ঈশিতা আপু উল্টা রিএক্ট দেখে কোন কিছু ভালো লাগছে না।

আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার বন্ধু বলল। কি হলো চুপ করে আছিস কেন,,, অন্য সময় বললার আগেই আমাকে বাঁশ দেওয়ার জন্য রেডি থাকতি আজকে কি হলো।

আমি ওকে বললাম তোদের এই প্রেম পত্রর জন্য ঈশিতা আপু আমাকে ভুল
বুঝে গেল,,, ফারিয়া কি চিরকুট টা দেওয়ার লোক পাই নাই,,, আমাকে দিয়ে এই দিতে হল?

(বন্ধু) কি ভুল?

আমি বন্ধুকে সব বুঝিয়ে বললাম,,, ও বলল তুই চিন্তা করিস না,,, আগামীকাল ঈশিতা আপুকে আমি আর ফারিয়া বুঝিয়ে বলব।

আমি উঠে বাসায় চলে যাচ্ছি,,,, পিছন থেকে আমার বন্ধু ডাক দিল।।

কোথায় যাচ্ছিস?

বাসায়?

স্যার না তো কে বলল দেখা করে যাওয়ার জন্য?

হ্যা?

আমি ঐখান থেকে উঠে স্যারের রুমে গেলাম,,, এবং স্যারকে বলে আসলাম স্যার আমি খেলতে পারবো না
,,,, স্যার অনেক রিকুয়েস্ট করেছে, কিন্তু স্যার আমার কাছে হার মানলো,, আমি খেলব না ব্যাস খেলব না?

তারপর আমি বাইক নিয়ে সোজা আপুদের বাসায় দরজার কলিং বেল চাপতে আপু দরজা খুলে দিল,,, দরজা খুলে আমাকে দেখে রেগে গেল,,, তুই এখানে কেন আসলি,,, তোকে না বললাম আমার কাছে আর না আসার জন্য,,,,

(আপু) দেখো তুমি ভুল বুঝছো,,, আমার স্কুল লাইফ থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত প্রেমের নামে কোন সম্পর্কে জড়ায়নি,,, জীবনের প্রথম একজনকে মনের খাচায় জায়গা দিয়েছি সে তুমি?

(আপু) তোর এই ন্যাকামো ভন্ডামি নাটক বন্ধ কর,,, তুই কি পেয়েছিস আমি কিছু বুঝিনা,,, তুই আমার কাছে না বলে কলেজে কেন গেছোস তাও আমি জানি,,, আমার কাছে আর কোনো মিথ্যে বাহানা চলবে না,,,, তুই যা এখান থেকে বলছি।
(আমি) প্লিজ বিশ্বাস করো ফারিয়া
(আপু) কিসের বিশ্বাস,, বিশ্বাস একটা কাচের আয়না একবার ভেঙ্গে গেলে তার জোড়া লাগানো যায় না,,,, তুই এখান থেকে যা বলছি আমি।
(আমি) আমি তোমাকে কিভাবে বিশ্বাস করাবো ফারিয়া মিশালকে কথাটা শেষ করতে পারলাম না এর ভিতর ফোনটা বেজে উঠলো স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার,,, আপু আমার হাত থেকে টান দিয়ে মোবাইলটা নিয়ে নিল,, তারপর ফোনটা রিসিভ করে লাউড স্পিকার দিল,,
(আপু) হ্যালো কে?
আমি ফারিয়া আমাকে চিনতে পারছ না,,,

★ ফারিয়াকে আর কিছু জিজ্ঞাসা না করে আমার মোবাইলটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল,,, আমি তার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেলাম,,, রাগে পুরো চেহারা লাল রক্তিম ধারণ করেছে,, মনে হচ্ছে শরীরের সারা রক্ত আপুর চেহারায় ভেসে উঠেছে।
তারপর আমাকে ঠাস করে এক থাপ্পর মেরে,, এই আমাকে বুঝাতে এসেছিস,,, বিশ্বাস করতে বলছিস,,,, আজকের পর থেকে শুধু আমার সামনে কেন,, আমাদের বাড়ির ত্রিসীমানায় ভিতরে যেন না দেখি তোকে,,, যদি বাইসেস ভুলেও আমার সামনে এসেছিস তাহলে আমার মরা মুখ দেখবি,,,,, আমি বলে দিলাম আমার শেষ কথা

(আমি) আমি তার ব্যবহারে কেঁদে ফেললাম,,, কি বলছো তুমি,,, কেন আমার সাথে এরকম করতেছ,,, না জেনে না বুঝে,, প্লিজ এরকম করো না আমার সাথে,, আমি তোমাকে না দেখে থাকতে পারবো না।

আপু আমার কোন কথায় শুনলো না?
আমার মুখের উপর দরজাটা বন্ধ করে দিল??

এখন সত্যিই আমার কাছে খারাপ লাগছে,,,আপ কখনো আমার সাথে এরকম করে না? আজকে একটা ভুল জিনিস নিয়ে ভুল বুঝল? পছন্ড রাগ হচ্ছে,, ফারিয়াকে যদি এই মুহুর্তে হাতের সামনে পেতাম,,, তাহলে কষিয়ে দুইটা থাপ্পর দিতাম,,,, বাইক নিয়ে সোজা মালেক চাচার দোকানে গিয়ে এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে বাসায় চলে গেলাম,,,

নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সিগারেট টানতে লাগলাম??

কিছুক্ষণ পরে আম্মু আমার রুমের দরজায় ধাক্কাতে লাগলো,,,, আমি সিগারেট ফেলে দিয়ে দরজা খুলে দিলাম?

আম্মু ভিতরে ঢুকে বলতে লাগলো,,,, রুমের ভিতরে সিগারেটের গন্ধ কেন,,, তুই কি রুমে সিগারেট খেয়েছিস””

আমি কোন কথা বলছি না”

(আম্মু) কি হল কথা বলিস না কেন?
(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে রুমে সিগারেটের গন্ধ কোথা থেকে আসলো?
(আমি) জানিনা?
(আম্মু) আচ্ছা ঠিক আছে খেতে আয়?
(আমি) খাব না খিদে নাই?
(আম্মু) কি বলছিস সকালে তো কিছু খাস নাই? শরীর খারাপ লাগছে?

(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে খাবি না কেন?
(আমি) বললাম তো আমার এখন খিদে নেই””” যাও তুমি এখন এখান থেকে?
(আম্মু ) কি হয়েছে তোর কোন সমস্যা?
(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে তোর চেহারা এরকম দেখা যাচ্ছে কেন,, আর সকালে খাস নাই,, এখনো খাবি না,, কলেজ থেকে এত তাড়াতাড়ি এসে পড়লি,, কিছুতো একটা হয়েছে
(আমি) আমার কিচ্ছু হয় নাই?
(আম্মু ) দেখ আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারবি না,,, আমাকে বল কি হয়েছে?
(আমি) বললাম তো কিছু হয় নাই,,, তুমি এখন এখান থেকে যাও আমি ঘুমাবো?

★ আমি সোফা থেকে উঠে খাটে শুয়ে পড়লাম,,, আম্মু আর কিছু না বলে চলে গেল,,

রাত ৮ তা আম্মু দরজায় অনেক ডাকাডাকি করলো খাবার জন্য,,,, কিন্তু আমি খাব না বলে দিলাম,,,,

রাত ১টা ঘুম ভেঙ্গে গেল খিদায় তাড়নাই,,, কখনো এক বেলা না খেয়ে থাকি নি,,, বালিশের নিচে হাত দিয়ে মোবাইলটা চেক করবো আপু ফোন দিয়েছে কিনা,,,, হঠাৎ করে মনে হলো আরে মোবাইল তো নাই,,, আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলছে,,,

আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে ফ্রিজ থেকে কিছু খেতে যাবো দেখি সবকিছু ঠান্ডা হয়ে আছে,,, আমি আম্মুর রুমের দরজায় গিয়ে ডাকতে লাগলাম,,, এক ডাক দেওয়ার সাথে সাথে আম্মু দরজা খুলে দিল,,, হয়তো আম্মু বুঝতে পেরেছে আমার কিছু একটা হয়েছে,,, সে চিন্তাই মনে হয় আম্মুর ঘুম হচ্ছে না,,,,

আম্মু দরজা খুলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল,,, কী হয়েছে আমার একমাত্র ছেলেটার,,, যে ছেলেটা এক বেলা না খেয়ে থাকতে পারে না,,, আজকের তিন বেলা না খেয়ে আছে,,,, বাবা আমাকে বল না তোর কি হয়েছে,,,

আমি আম্মুর চোখের পানি মুছে দিয়ে আম্মুকে বললাম আমার কিছু হয় নাই,,, শুধু শুধু টেনশন করছো,,, ওই সময় আমার পেট ভরা ছিল,,,, এখন প্রচুর খিদে লেগেছে?
(আম্মু) সবকিছুতো ফ্রিজে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে,,, তুই বস আমি তোকে রুটি বানিয়ে দিচ্ছি,,,
(আমি) এত রাতে তুমি রুটি বানাবে,,,
(আম্মু) রুটি বানাতে বেশিক্ষণ লাগবেনা তুই মাত্র 5 মিনিট বস,, ফ্রিজে বাজি রাখা আছে শুধু গরম করলেই হবে।।।

আমি মার কথা শুনে ভাবনার জগতে চলে গেলাম,,, মার ভালোবাসা এরকমই হয়,, প্রিয় সন্তান না খেয়ে আছে মাকে রাত দুইটা বাজে এক ডাক দেওয়ার সাথে সাথে দরজা মেরে দিল,,, তারপর সন্তানের খিদের কথা শুনে রুটি বানাতে চলে গেল,,, প্রতিটি মা এই তাদের সন্তানকে নিস্বার্থভাবে ভালবেসে যাই সারা জীবন,,, কিন্তু বোকা সন্তান গুলো মাকে পুরোপুরিভাবে চিনতে পারে না,,,,, মা একটু বুড়ো হলে মাকে অবহেলার পাত্র ভেবে ছুড়ে ফেলে দেয় ডাস্টবিনে?

রাত দুইটা বাজে যদি নিজের বিয়ে করা বৌকে বলতাম আমার খিদা লেগেছে রুটি বানিয়ে দাও,,, বউ বলতো তুমি কি পাগল হয়েছ,,, এত রাতে তোমাকে রাতে রুটি বানিয়ে দিব,,, আমি পারবো না,,, এখন ঘুমিয়ে পড়ো সকালে বানিয়ে দিব,,,, আর যদি প্রেম করে বিয়ে করা বউ হয়,,, তাহলে তো রাত 10 টার পরে বাহিরে থাকা যায় না,, কোন সাহসে রাত দুইটা বাজে প্রেম করে বিয়ে করা বউকে বলবে রুটি বানিয়ে দিতে,,, তুমি যে তার চোখের দিকে তাকাতে ভয় পাও,,, আর যদিও তুমি আদর মাখা কন্ঠে বল আমার প্রচুর খিদে লেগেছে রুটি বানিয়ে দাও না।। তাহলে বলবে কি বলছিস তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস,, রাত দুইটা টা বাজে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বলছিস রুটি বানিয়ে দিতে,,, এমন রুটি বানাবো না,,, জে কামোর দিও ছিঁড়তে পারবা না,,, চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়ো,,,, কিন্তু আপনার পেটে খিদে থাকলে কি শুয়ে পড়লে ঘুম আসবে,,,,, আবার এরকম অনেক আছে সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এসে দেখে বউ সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত,,,, বউকে খাবারের কথা বললে ,,,, বউ বলে,,, ভাত পাক করা আছে ডিম টা পোস করে খেয়ে নাও,,, বউয়ে রাগী চোখে দিকে থাকিয়ে আর কিছু বলতে পারে না,,,
আর শুধু রাত দুইটা বাজে না রাত যত ঐ বাজুক মাকে যেয়ে বলবেন মা আমার না প্রচুর খিদে লেগেছে,,,, মা সাথে সাথে বলবে তাহলে আগে বলিস নি কেন,,, তুই বস আমি ব্যবস্থা করছি,,, প্রিয় সন্তানের খিদা মা সহ্য করতে পারে না,,,, রাত যত ঐ বাজুক মা কখনো বলে না এত রাতে আমাকে ডাকলি কেন,,, আমি পারব না তোকে এখন রুটি বানিয়ে দিতে,,,,
এজন্যই তো মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত,,, আমি ধিক্কার জানাই সেসব সন্তানকে যারা বউয়ের কথায় পরে,, অমূল্য রতন অমূল্য সম্পদ জন্মদাত্রী মা কে,,, যে মা দশ মাস দশ দিন অসহ্য মৃত্যুর যন্ত্রনা সহ্য করে তোমাকে দুনিয়াতে এনেছে,,, সেই মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম নামক একটা বাসে স্থলে পাঠিয়ে দেয়,,, আমি সেসব সন্তানকে কখনো মানুষ রূপে গণ্য করি না,, তারা কখনো মানুষ হইনি,,, এবং কখনো হতে পারবে না,,,

কারণ মা শব্দটা এমন একটা জিনিস,, যার ভেতরে লুকায়িত আছে লক্ষ কোটি দরদ মায়া মোহাব্বত অফুরন্ত নিঃস্বার্থ হীন ভালোবাসা,, সে মা যদি একবার দুহাত তুলে মাওলার দরবারে কন্দন করে আপনার ভাল জন্য,,, তাহলে আল্লাহ তোমাকে এমন উঁচু মাকামে পৌঁছে দিবে যে,,,, তুমি কখনো কল্পনাও করনি,,,

আর মা যদি একবার বদ দোয়া করে আপনার জন্য,, তাহলে আপনি জলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন,,, কারণ মায়ের দোয়া আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে দ্রুত বেগে কবুল করেন,,,, কারণ মাঝে সন্তানের জন্য জান্নাতের একটা অংশ,,,, সে মাকে কখনো মনে কষ্ট দিও না,,,, কারণ মায়ের মনে কষ্ট দিলে,,, আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে,,, মায়ের মত আপন এই দুনিয়াতে আর কেউ নাই,,, মায়ের ভালবাসা এবং ত্যাগের কথা বলে বা লিখে আমার মতো কয়েক হাজার কোটি অধম শেষ করতে পারবো না?

আজ শুধদুর প্রবাসে থেকেও কাজের ফাঁকে মাকে অসংখ্যবার মিস করি,,, বিশেষ করে লাঞ্চ টাইমে,,, মায়ের হাতের রান্না খুব মিস করি,,,, তাই তো বুক ফুলিয়ে মাকে প্রতিবারেই মোবাইলে জানাই,,, মা তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং অনেক বেশি মিস করি
💙 আই লাভ ইউ মা 💙”””💟আই লাভ ইউ সো মাচ? 💟

মা রুটি বানানো শেষ হলে,,, আমি রুটি খেয়ে রুমে আসলাম মা আমার পিছনে পিছনে আসলো,,,, আমি এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম,,, মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,, মার আদর মাখা মমতাময়ী হাতের স্পর্শে কিছুক্ষনের ভিতর আমি অজানা ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম।

সকাল 9 টায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে রুমে বসে রইলাম,,, মা এসে বলল কলেজে যাবি না,,, আমি বললাম না””

তাহলে রুমে বসে আছিস কেন,,, যা বাহির থেকে একটু ঘুরে আয়,,, মনটা ভালো লাগবে,,,, মা আমার হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিল আর বলল বিকালে তোর আব্বু আসবে,,,,

কিন্তু আমি রুম থেকে যাই নাই,,, কিছুক্ষণ পরে আম্মুর মোবাইল টা বাজতে লাগলো,,, আম্মু ফোন ধরে কথা বলছে,, কে ফোন দিয়েছে জানিনা,,, পাঁচ মিনিট পরে আম্মু আমার কাছে ফোনটা দিলো,,, ফোন ধরে দেখি খালামণি,,,,, বলতে লাগলো,,, তোর মোবাইল কোথায়,,, কোন সময় থেকে ফোন দিচ্ছি তোর মোবাইল বন্ধ,,, আমি বললাম মোবাইল হারিয়ে গিয়েছে,,,,

খালামণি বলল আচ্ছা ঠিক আছে,,, আজকে বিকাল চারটায় তোর খালু আসবে,,, তুই আর ঈশিতা গিয়ে রিসিভ করে আনবি,,,, খালামণি এ কথা বলতে দেরি আমি মোবাইলে স্পষ্ট শুনতে পারছি,,, ইশিতা আপু বলছে ও যদি যাই তাহলে আমি যাব না,,,,, খালামণি বলল কেন ও গেলে তুই যাবি না কেন,,, সারাদিন তো তুই ও সাথেই থাকিস?

আপু বলতে লাগল কে বলল আমি ওর সাথে থাকি,,, ও গেলে আমি যাব না ব্যাস,,, আমি আর কিছু বললাম না আমি খালামণিকে বললাম খালা মনি আমার শরীরটা ভাল না আমি যেতে পারবো না,,, তারপর ফোনটা রেখে দিলাম,,, আম্মু বলতে লগলো কেন যাবিনা তুই,,, আমি বললাম আমার শরীরটা ভালো লাগছে না তাই যেতে পারবো না,,,,,, আম্মু তো আর জানে না ঈশিতা আপু কি বলছে?

আম্মু বলল আচ্ছা ঠিক আছে,,, তোর মোবাইল হারিয়েছিস কিভাবে,,,

পকেট থেকে পড়ে গিয়েছিল?

আম্মু আমার হাতে 10 হাজার টাকা দিয়ে বলল এখন গিয়ে মোবাইল কিনে আনবি,,, মোবাইল ছাড়া কি চলা যায়,,, কোন সময় কখন কোন কাজে লাগে,,, যা এখন গিয়ে কিনে আনবি?

আমি মার্কেটে গিয়ে একটা মোবাইল কিনে আনলাম,, সারাদিন আর কারো সাথে কোন কথা বললাম না,,, বিকালের দিকে আব্বু আসলো,,, ওইদিকে খালু ও আসলো,,, আজ রাত 12 টায় আপুর বার্থডে কালকে হইতে অনুষ্ঠান করবেন,,, আমি একটা অন্য নাম্বার থেকে আপুকে ঠিক ১২টায় বার্থডে উইশ মেসেজ পাঠালাম,,,, আমাকে কিছুক্ষণ পরে তার রিপ্লাই দিল,,,,
থ্যাঙ্ক ইউ,,, আপনাকে কেতো ঠিক চিনলাম না,,, সবার আগে আপনি আমাকে উইশ করলেন,, কে আপনি,,, আমি মেসেজটা সিন করে মোবাইলটা পকেট এ রেখে দিলাম,,,, কে আমি পরিচয় দিতে ইচ্ছে করছে না,,,, আমি ভাবতে লাগলাম একটা মানুষ এত বড় বেইমান কিভাবে হয়,,, সামান্য একটা জিনিস নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি করে,,, আজকে দিনের জন্য
আমাকে এক মিনিটের জন্য ফোন দিল না,, যে মেয়ে প্রতি মিনিটে মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে ঝারি দিতো,,, আজকে তার বার্থডে আমাকে কে একটুও মিস করে না,,, আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে,, এই আমাকে ভালবেসেছিল,,, একটা জিনিস যাচাই না করে,, আমাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে,,, আচ্ছা দেক আমাকে কষ্ট দিয়ে যদি সুখ পাই,,, তাহলে দেক সমস্যা নেই,,, আজকে তাকে হয়তো অনেকে তাকে বড় করে উইশ করবে,,,, আমার উইশের আশায় সে বসে থাকবে নাকি,,, আমি তো প্রেমের নামে ছলনা করেছি,,,,,।

মাথা থেকে সব চিন্তাভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে,,, ঘুমানোর চেষ্টা করলাম,,,, কিন্তু ঘুম নামে বস্তুর টা মনে হয় কোন জায়গায় হারিয়ে গেছে,,, এপাশ-ওপাশ করতে লাগলাম,,,, কোন লাভ হল না,,, তাই বাধ্য হয়ে বাইরে চলে আসলাম,,, আসার সময় আম্মু আমাকে দেখেছে,,,, আমি একটা দোকান থেকে দুটো ঘুমের ঔষধ নিলাম,,, আমি রুমে ঢুকে ঘুমের ওষুধ গুলো খেয়ে ঘুমাতে যাব,,, এমন সময় আমার দরজায় আম্মু ডাকতে লাগলো,,, আমি উঠে দরজা খুলে দিলাম,,, দেখি আম্মু আব্বু দাঁড়িয়ে
আম্মু বলতে লগ্লো কি হয়েছে তোর,,,

(আমি)কিছু হয়নি এমনি ঘুম আসছে না,,,
(আম্মু) আজকের দু’দিন যাবত দেখছি,, তুই কেমন মনমরা হয়ে আছিস,, আমাকে বল কি হয়েছে,,,
কিচ্ছু হয়নি আমার,,,, আমার কথা শুনে আব্বু বলতে লাগলো,,, আমার কাছে না বলিস তোর আম্মুর কাছে বল,,, কি হয়েছে,,,, আগে তো তোর শরীরের অবস্থা এরকম ছিল না,,,, আর আমি আসার পরেও আমার সাথে কোন কথা বলিস নি?
তোর আম্মুকে বল কি হয়েছে,,, আমি আব্বুকে বললাম কিচ্ছু হয় নাই আমার তোমরা ও অযথা টেনসন করছো,,, আমি এখন ঘুমাবো না যাও,,,,

★ আব্বু আম্মু আর কোন কথা না বলে চলে গেল,,, সকাল দশটায় কারো ডাকে ঘুম ভাঙলো,,, তাকিয়ে দেখি আমার বেডে আমার বন্ধু শামীম বসে আছে,, আমি ওকে দেখে বললাম কিরে তুই এখানে কিভাবে,,, শামীম শালা তুই দুদিন ধরে বাহিরে বের হোস না,,, কলেজে যাস না,,, তোকে অনেকবার ফোন দিয়েছি তোর মোবাইলে বন্ধ,,,,,,
(আমি) মোবাইল হারিয়ে গিয়েছে,,, কিন্তু তুই এখানে কিভাবে,,,

(বন্ধু) আন্টি ফোন দিয়েছিল তুই দুদিন ধরে মন খারাপ করে রুমে বসে থাকিস,,, আন্টি আঙ্কেল কাউকে কিছু বলিস না,,,, তাই আমাকে আন্টি সকালে ফোন দিয়ে বলল আস্তে,,,,, এখন উঠ ফ্রেশ হ তারপর দুজনে নদীর পারের দিকে যাব,,, অনেকদিন ঐ দিকে যাওয়া হয় না।

★ আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে,,, নদীর পারে চলে গেলাম,,, দুজনে প্রায় তিন ঘন্টার মতো ঘুরাঘুরি করলাম,,, আমি শামীম কে সব খুলে বলেছি,,,,,, শামীম বলল তুই কোন চিন্তা করিস না,,, আমি ফারিয়াকে আর মিশালকে এনে আপুর সামনে দাঁড় করাবো,,,, ওরা আপুকে সব খুলে বলবে?

সন্ধ্যা 7 টা আব্বু আম্মু চলে গেল খালামনির বাসায় আপুর বার্থডের অনুষ্ঠান,,, আমাকে বলল,,, আমি বললাম আসবো তোমরা যাও,,,

৭.৩০ আমি এখনো রুমে বসে আছি,,, আমি কি তাদের বাসায় যাব,,,, সেতো আমাকে বলেছে,,, আমি যদি তার সামনে যাই তাহলে তার মরা মুখ দেখবো?
না যাওয়া যাবে না,,,, এক কাজ করা যায়,, প্রেমিকা হিসেবে নয় আপু হিসাবে তো তাকে আমি বার্থডে গিফট দিতে পারি?

অনেক আগে একজোড়া নুপূর কিনে রেখেছিলাম আপুর বার্থডে তে তাকে পড়িয়ে দিবো বলে,, নুপুরের দুটা পকেট এ নিয়ে বাইকে করে মার্কেটে রওনা দিলাম,,, আরো কিছু তার পছন্দের গিফট কিনলাম,,, সাথে আমার এবং তার পছন্দের একটা নীল কালারের শাড়ি কিনলাম””””
সবগুলো গিফট প্যাকেট করে বাইকে রওয়ানা দিব,, এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো,,, স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি আমার বন্ধু শামীম,,,,

ফোন ধরে শামিম আমাকে যে কথা শোনালো,,, আমি কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম,,, আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল,,, মনে হচ্ছে আকাশ টা ভেঙ্গে আমার মাথার উপরে পড়েছে,,,, আমি পছন্দ কাপতে লাগলাম,,,, সামান্য একটা ভুলের জন্য আমার সাথে এত বড় অন্যায় হতে পারে না,,,,

★ খালু নাকি আপুর বিয়ে অন্য একটা ছেলের সাথে ঠিক করেছে,,, আর তাতে নাকি আপু রাজি,,, ছেলেটা এখন আপুদের বাসায় আছে,,, কিছুক্ষণ পরে তাদের এনগেজমেন্ট আংটি পড়ানো হবে,,, আব্বু আম্মু নাকি খালা খালুকে বুঝিয়ে বললো,,,, কিন্তু আপু নাকি এখন কারো কথাই শুনছে না,,, সে নাকি এই ছেলেকেই বিয়ে করবে,,,,, আম্মু নাকি আপুকে অনেক বুঝিয়েছে,,,, আব্বু আম্মুকে নাকি অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছে,,,, আমার চরিত্র খারাপ আমার নাকি আরো অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে,, আরো অনেক কিছু,,,, আমি ভাবতেও পারছি না,,, আপু সামান্য একটা বিষয় নিয়ে,, এরকম সিদ্ধান্ত নিবে,,,, আমি শামীম কে বললাম মিশাল ফারিয়া আসে নাই,,,, ও বলল ওরা নাকি জ্যামে পড়ে গেছে,, আসতে একটু দেরি হবে,,,,

আমি গিফট গুলো নিয়ে বাইকে উঠে আনমনা হয় বাইক চালাচ্ছি,,,, কিছুক্ষণ পরে আবার ফোনটা বাজতে লাগলো,,,, বাইক স্টপ না করে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে রিসিভ করলাম,,,শামিম সাথে সাথে বলতে লাগলো,,, তুই কোথায় তাড়াতাড়ি আয়,,, মনে হয় আগামী কিছুক্ষনের ভিতর আপুকে আংটি পড়ানো হবে,,,,, তুই তাড়াতাড়ি আয় তা না হলে সব শেষ হয়ে যাবে,,,,, আমি আর কিছু ভাবতে পারছিনা,,, আমি মোবাইলটা কানে লাগি এই বাইকের হাই স্পিড তুললাম,, এত দ্রুত বাইক চলতে লাগল যে,,, রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো কয়েক সেকেন্ডের ভিতর আমার পিছনে পড়ে যাচ্ছে,,,, হঠাৎ করে সামনে খেয়াল করে দেখি একটা লরি আসছে,,, আমি লোরী টার সাইট কেটে গিয়ে সামনে যে আর একটা গাড়ি আছে,,, আমার খেয়াল নাই,,, একটা মাইক্রোবাস এর সাথে এত স্পিডে সংঘর্ষ হলো যে আমার বাইক অর্ধেকটা দুমড়ে মুড়ছে গেছে,,, কিছুক্ষণের জন্য আমি জ্ঞান হারালাম,,,, কিছুক্ষণ পরে যখন জ্ঞান ফিরলো দেখি আমার চারপাশে মানুষ সভা গম,,, আমি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা,,,, কিছু লোক ধরে আমাকে দাঁড় করালো,,,, আমি তাকিয়ে দেখি সারা রাস্তা রক্ত দিয়ে ভেসে যাচ্ছে,,, আমার মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত পরছে,,, আমি হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি হাত কেটে অঝোর ধারায় রক্ত পড়তে লাগলো,,, আমার সারা শরীরে রক্ত আর রক্ত,,, কিছু লোক আমাকে কয়েকটা কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে দিল,,, পিঠে প্রচন্ড ব্যথা করছে,,,, কিছু লোক আমাকে একটা গাড়িতে তুলে হসপিটালে নিতে চাচ্ছে,,,, কিন্তু আমি যাব না,,,, আমার যে ঐ জায়গায় যেতে হবে,,,,, লোকেরা বলতে লাগলো,,, তুমি এখন যদি হসপিটালে না যাও,,, তোমার শরীরের সমস্ত রক্ত বের হয় রক্ত হীনতায় তুমি মারা যাবে,,, কিন্তু আমি তাদের কোনো কথা ঐ তোয়াক্কা করলাম না,,,,,, এটা আমার প্রথম প্রেম,,, তাকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা মৃত্যুর সমান,,,, তাকে যদি না পাই তাহলে বেঁচে থেকে লাভ কি।।

আমি তাদেরকে বললাম আমাকে একটা গাড়িতে তুলে দেন,,,, তারা আমাকে এবং আমার মোবাইল গিফট গুলো কে গাড়িতে তুলে দিল,,,, মোবাইলের স্কিন ফেটে গেছে। গাড়ির সিটে হেলান দিতে গিয়ে দেখি হেলান দিতে পারছি না,,,, সাথে সাথে পিছনে হাত দিলাম,,, বুঝতে পারলাম বড় কোন কাঁচের খন্ড আমার পিঠ দিয়ে ভিতরে ঢুকে আছে,,,, অঝোর ধারায় রক্ত পড়তে লাগলো,,,, আমি ড্রাইভারকে বললাম ভাই তাড়াতাড়ি যান,,, ডাইভার কিছুক্ষনের ভিতর আমাকে পৌঁছে দিল,, আমি ড্রাইভারকে বললাম ভাই আপনার কাছে কোন কাপড় চোপড় আছে,,,, সে আমাকে একটা চাদর দিল,,, আর আমাকে বলল আপনি কি পাগল,,, যেভাবে রক্ত পড়ছে কিছুক্ষনের ভিতর তো আপনি মারা যাবেন,,, আমি জীবনের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে হেটে আপুর বাসার গেটের সামনে গেলাম,,,, চাদর দিয়ে সমস্ত শরীর দেখে ফেললাম,,,, জানিনা ভিতরে কি হচ্ছে,,, আমি দারোয়ান চাচার কাছে গিফট গুলো দিয়ে বললাম,,,, আমি যে দিয়েছি সে কথা বলবেন না,,,, তাহলে সে হয়তো এখানে আসতে পারে,,, আর সে আমাকে বলেছে আমি তার সামনে গেলে তার মরা মুখ দেখবো? দারোয়ান চাচা গিফট গুলো নিয়ে ভিতরে চলে যাচ্ছে,,, আমি গেট থেকে একটু দূরে উল্টো হয়ে বুক টা দেওয়ালের লাগিয়ে জীবনের শেষ নিঃশ্বাসটুকু টানছি,,,, প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে,,, মনে হচ্ছে কেউ আমার কলিজা টা টেনে বের করে নিচ্ছে,, মৃত্যুর যন্ত্রনা হয়তো এরকমই,,
শেষবার মা বাবার চেহারাটা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে,,,, হয়তো দেখতে পাবো না,,তার আগেই রক্ত হীনতায় মারা যাব আমি,,, আমার সিনিয়র খালাত বোন
এখন অন্যের হয়েগেছে???

(((চলবে))))


Tags: , , , , , , , , , , , , , , , ,

Comments are closed here.