মেতে উঠল পুরানো দিনের সুখ

October 8, 2013 | By Admin | Filed in: কাকি সমাচার.

এই প্রথম ঈশানি ছেলের জন্ম দিনে তাকে নিজের হাতে পায়েস রেঁধে খাওয়াতে পারল না । এই সেশনে চোদ্দটা ক্যাজুয়াল লিভ নেওয়া হয়ে গেছে । এবার ছুটি নিলে এম. এল. হয়ে যাবে । স্কুল পরিচালন সমিতিও ওর এত ঘন ঘন ছুটি নেওয়া পছন্দ করছে না । তাই ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই ।
সকাল থেকেই ঈশানির মনটা খারাপ । ছেলে কয়েকবার ফোন করেছে । ছেলের বাবা রাহুলও ফোন করেছে । রাহুল বাঁকুড়ার এক বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক। সে ছেলেকে নিয়ে বিষ্ণুপুরে পৈতৃক বাড়ীতে থাকে । আর ঈশানি চাকরি সূত্রে হুগলি স্টেশনের কাছে একটা ভাড়া বাড়ীতে থাকে । ওর সঙ্গে থাকে মুর্শিদাবাদের মেয়ে তন্দ্রা , ওর কলিগ । দুজনে একই সঙ্গে হুগলি মাতঙ্গিনী বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছে । ভাড়া বাড়ীটা ওদেরই স্কুলের ক্লার্ক অবনীমোহনের ভগ্নীপতির । তিনি কর্মসূত্রে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা । ছয় মাস হল তারা এই বাড়ীতে এসেছে । তাদের চাকরিরও বয়স ছয় মাস ।
বিয়ের আগেই ঈশানি জীববিদ্যায় মাস্টার্স করেছে । ইচ্ছা ছিল চাকরির পর বিয়ে করবে । কিন্তু বাবা তার তড়িঘড়ি করে বিয়ে দিলেন । পাত্র তাঁর বন্ধু পুত্র , ভালো চাকরি করে । জায়গা জমিও ভালই আছে । এমন পাত্র তিনি হাত ছাড়া করতে চাননি । রাহুলরাও বিয়ের জন্য তাড়াতাড়ি করছিল । বাধ্য হয়ে তাকে বিয়ে করতে হল ।
বিয়ের পর আট বছর চুটিয়ে সংসার করল । দুটো ছেলে মেয়ে হল । অর্ক বড় , সে এবার পাঁচে পা দিল । মেয়ে তিন্নির বয়স তিন । ওদেরকে শাশুড়ি মাতা দেখভাল করেন । তিনি এখনও বেশ শক্ত সমর্থ আছেন । তবু এস.এস.সি. থেকে যখন রেকমেন্ডেশান লেটার এল তখন রাহুল একটু গাঁইগুই করল –
অতদূরে যাবে ।
ঈশানি বলল
-কষ্ট করে এতদূর লেখাপড়া করেছি । চুপচাপ বসে থাকব ? বিয়ের সময়ই তো বলেছিলাম পেলে চাকরি করব । তারপর যখন এস.এস.সি. পরীক্ষা দিলাম তখনও তো আপত্তি কর নাই । তাহলে এখন বাধা দিচ্ছ কেন ?
রাহুল তখনও চুপ করে আছে দেখে ঈশানি দুহাতে রাহুলের মুখটা ধরে ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে বলল
-লক্ষ্মীটি বাধা দিও না । এরকম সুযোগ আর আসবে না । আর এখন তো মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু হয়েছে । পরে সুযোগ মত কাছে চলে আসব ।
-কিন্তু এত অল্পতে তো আমার মত আদায় করা যাবে না ।
-মানে ।
-মানে আমি এখন তোমাকে একটু বড় আদর করব তারপর ভাববো তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব কিনা ।
-বড় আদর মানে কি ?
-বিয়ের পর এতগুলো বছর হয়ে গেল এখনও বড় আদর কি জান না ? তাহলে এস তোমাকে বুঝিয়ে দিই । এই বলে রাহুল ঈশানিকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে যেতে থাকে । ঈশানি ছাড়া পাবার জন্য রাহুলের পিঠে কিল মারতে থাকে । রাহুল সেসব পাত্তা না দিয়ে তার কাজ করতে থাকে । বিছানার সামনে ঈশানিকে দাঁড় করিয়ে তার গা থেকে কাপড়টা খুলে নেয় । ঈশানি বলতে থাকে
-লক্ষ্মীটি এই ভর দুপুরে এরকম কোরো না । ছেলেরা চলে আসতে পারে ।
-ছেলেরা তাদের ঠাকুমার পাশে শুয়ে ঘুমাচ্ছে । কেউ আসবে না । এই বলে রাহুল ঈশানি বিছানায় ফেলে তার দেহ থেকে পেটিকোট আর বক্ষ বন্ধনীও খুলে নেয় । নিজের পাজামাটা একটানে খুলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঈশানির ওপর । ঈশানির ঠোঁটে সজোরে চুমু খেয়ে ধীরে ধীরে নীচে নামতে থাকে । তারপর ঈশানির ভরাট স্তনে মুখ ডুবিয়ে দেয় । নির্মম পেষণে তার স্তনযুগলকে লাল করে দেয় । শেষে তার লৌহ কঠিন পৌরুষকে নিয়ে সজোরে প্রবেশ করে ঈশানির মধ্যে । তখনও ঈশানি ভিজে না ওঠায় রাহুলের পৌরুষ তাকে আঘাত করে । দাঁতে দাঁত চিপে সে যন্ত্রনাকে সইয়ে নেয় । রাহুল তার পৌরুষ দিয়ে ঈশানিকে ফালা ফালা করতে থাকে । আস্তে আস্তে যখন ঈশানির ভাল লাগতে শুরু করে তখনই রাহুল অন্যান্য দিনের মত ঈশানির ভিতরে ঝড়ে গিয়ে তার বুকের ওপর থেকে সরে এসে বিছানার ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে । তখনও ঈশানি তার চরম আনন্দ লাভ করেনি । তাই সে তার পাওনা বুঝে নিতে রাহুলের ওপর চড়ে বসে এবং তখনও দৃঢ় থাকা রাহুলের পুরুষাঙ্গ দ্বারা নিজেকে আমূল বিদ্ধ করে । তারপর দ্রুত গতিতে ওঠা-নামা করতে করতে সুখের শীর্ষে পৌঁছ যায় ।
হঠাৎ ক্লাস শেষের ঢং ঢং ঘন্টার শব্দে আধো ঘুম থেকে জেগে উঠে ঈশানি দেখে সে স্টাফ রুমের চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল । একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে স্টাফ রুমের জানলা বাইরের আকাশটার দিকে তাকিয়ে দেখল সেখানে কালো মেঘের ঘনঘটা । বৃষ্টি হতে পারে । এক পশলা বৃষ্টি হলে পচা ভাদরের গরমের হাত থেকে কিছুটা রেহাই মিলবে । রাতে ঘুমটা ভালই হবে । রাতের কথা মনে হতেই তার মনে পড়ল আজ রাতে গোটা বাড়ীতে সে একা । আজ শনিবার । তন্দ্রা আজ তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসে বাড়ী গেছে । আসবে সোমবার । রান্নার দিদি মোক্ষদাও ছুটি নিয়ে তার মেয়ের বাড়ী গেছে । ঈশানির মনে হল সেও বাড়ী গেলে ভাল করত । কিন্তু গত সপ্তাহে বাড়ী গিয়ে স্কুলে দেরীতে পৌঁছানোয় সেক্রেটারির দাঁত খিচুনি শুনতে হয়েছে । তাই এ সপ্তাহে আর রিক্সটা নিতে পারল না । মনে মনে ঠিক করে রাখল পরের জন্মদিনে ছেলের সঙ্গে থাকবেই ।
শনিবার , দুপুর ১ টা ৪৫ –এ স্কুল ছুটি হওয়ার পর ঈশানি বাসায় ফিরে এসে ব্যাগটা চেয়ারের ওপর ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে কাপড় না ছেড়েই বিছানার ওপর ধপাস করে বসে পড়ল । সাধারণত এটা সে করে না । অন্যান্য দিন স্কুলের কাপড় ছেড়ে হাত – পা ধুয়ে তবেই বিছানায় আসে । কিন্তু আজ মনটা এতই ভারাক্রান্ত যে কোন কিছুই করতে ইচ্ছা করছে না । আস্তে আস্তে বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ল । চোখে ঘুম না এলেও চোখ বন্ধ করে শুয়ে তার এত দিন পর্যন্ত জীবনের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব শুরু করতে শুরু করল । দেখল তার পাওনার খাতা প্রায় শূন্য । সে জীবনটাকে যেভাবে কাটাতে চেয়েছিল তার কিছুই প্রায় হয়নি ।
তার জীবনের সমস্ত ছোটো-বড় ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকে । আজ বেশি করে মনে পড়ে তার প্রথম প্রেমকে । তখন ঈশানি বড়জোড়া কলেজের ছাত্রী । সেই সময় রজতাভ মল্লিক তাদের কলেজের ছাত্র । হ্যান্ডসাম পেশীবহুল চেহারা । সেই ছেলে তাকে সিঁড়ি দিয়ে ডিপার্মেন্টে ঢোকার সময় হাতে একটা চিঠি গুঁজে দিয়ে যায় । চিঠি খুলে দেখে সেটা প্রেমপত্র । তাতে ইনিয়ে বিনিয়ে বহু কথা লেখা । ঈশানি প্রথম দিকে এই চিঠিকে গুরুত্ব দেয় না । কিন্তু রজতাভও ছাড়ার পাত্র নয় । সে নিয়মিত এরকম চিঠি দিতেই থাকে । শেষে ঈশানি এক দিন দেখে এই ধরণের চিঠি পড়তে তার ভালই লাগছে । শুরু হল মন দেওয়া-নেওয়ার পালা । ফাঁকা ক্লাস রুমে , কলেজের বকুলতলা বা কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় দুজনে হাত ধরাধরি করে মন বিনিময় করে পরস্পরের কাছাকাছি আসতে লাগল ।
ঈশানির প্রথম চুম্বনের দিনটার কথাও খুব মনে পড়ছে । সেদিন রজতাভ বলল
-চল আজ শাল-পিয়ালের জঙ্গলে দুজনে হারিয়ে যাই ।
-ভয় করছে ।
-আরে সঙ্গে আমিতো আছি ।
সব দ্বিধা সরিয়ে রেখে ঈশানি চেপে বসল রজতাভর মোটর সাইকেলের পিছনে । আর রজতাভ যেন রাজকন্যাকে তার পক্ষীরাজে চাপিয়ে হাওয়ার বেগে ছুটতে লাগল জঙ্গলের দিকে । ঈশানি ভয়ে চোখ বন্ধ করে রজতাভর কোমর চেপে ধরল । ঈশানির নরম স্তন দুটো রজতাভর পিঠের ওপর চেপে বসল । রজতাভ ঈশানির স্তনের স্পর্শ সুখ অনুভব করতে করতে বনের বুক চিড়ে চলে যাওয়া লাল মোরাম বিছানো রাস্তার ওপর দিয়ে তার বাইক ছোটাতে লাগল ।
-আর কত দূর ? ঈশানি ভয় মিশ্রিত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করল ।
-আর এসে গেছি । এই বলে রজতাভ তার বাইকের স্টার্ট বন্ধ করল । ঈশানি তাকিয়ে দেখল পলাশ গাছের লাল রঙা ফুলে যেন চারদিকে আগুন ধরে গেছে । সঙ্গে রয়েছে মহুয়া ফুলের মাতাল করা গন্ধ । যেন নেশা ধরে যাচ্ছে ।
-কেমন লাগছে ? রজতাভ বলে উঠল ।
-অবর্ণনীয় সুন্দর । এত ভাল জায়গায় আনার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ ।
-ওই মহুয়া গাছটার তলায় তোমার কোলে মাথা রেখে কিছুক্ষণ শুতে চাই ।
-বেশতো চলো ।
-মহুয়া গাছের তলায় ফুল বিছানো ঘাসের ওপর ঈশানি বসলে রজতাভ তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল । মনের অজান্তেই ঈশানি রজতাভর মাথায় , মুখে হাত বোলাতে শুরু করল । অদ্ভূত এক ভাল লাগায় রজতাভর মন ভরে উঠল । রজতাভ দুহাত দিয়ে ঈশানির ক্ষীণ কটিকে বেষ্টন করে বনদেবীর হৃদয়ের শব্দ অনুভব করতে চেষ্টা করল । চারপাশে পাতা ও ফুল পড়ার টুপ্ টাপ্ শব্দ , আর দূরে পাতার আড়াল থেকে নাম না জানা একটি পাখীর সুমিষ্ট সুর তাদের হৃদয়কে ছুঁয়ে যেতে লাগল ।
-ভাল লাগছে দেবী ?
এর কোন উত্তর না দিয়ে ঈশানি হঠাৎ রজতাভকে চুম্বন করে বসল । ঘটনার আকস্মিকতায় রজতাভ লাফিয়ে উঠে পড়ল ।
দেখল ঈশানি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে আছে । সে এক হ্যাঁচকায় ঈশানিকে দাঁড় করিয়ে তার বলিষ্ঠ দুহাত দিয়ে ঈশানিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করল । ঈশানি ভীরু কপোতীর মত রজতাভর প্রশস্ত বুকে মুখ লুকালো । রজতাভ এক হাত দিয়ে ঈশানির কোমর জড়িয়ে ধরে অন্য হাতে ঈশানির মুখটা তুলে ধরল । দেখল ঈশানি চোখ বন্ধ করে আছে । তার গোলাপী রঙের পাতলা ঠোঁট দুটো কিসের যেন আমন্ত্রণে তির তির করে কাঁপছে । রজতাভ আস্তে আস্তে তার ঠোঁট দুটো ঈশানির ঠোঁটের ওপর নামিয়ে নিয়ে এল । অনাস্বাদিত এক অনুভূতিতে তারা কেঁপে উঠল । ঈশানি তার ঠোঁট দুটো আরও মেলে দিল । রজতাভ তার পুরুষালি ঠোঁট দিয়ে ঈশানির ঠোঁট দুটোকে নিপীড়ণ করতে লাগল । ঈশানি একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়ে অনুভব করল রজতাভর হাত তার শরীরের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে । নিষিদ্ধ এক মাদকতায় হারিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ ভেসে উঠে ঈশানি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে উঠল
-আর নয় রজত । এই পর্যন্তই থাক । বাকীটা বিয়ের পর । তানাহলে নিজেকে খেলো এবং সস্তা বলে মনে হবে । রজতাভ তারপর আর জোর করেনি ।
ঈশানি এরপর জীববিদ্যায় প্রথম শ্রেণিতে অনার্স পাশ করে মাস্টার ডিগ্রি করার জন্য বর্ধমান চলে গেল । আর রজতাভ বি. লিব . করার জন্য বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হল । তারপর সময়ের নিয়মে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ ক্ষীণ হতে হতে রজতাভ এখন শুধুমাত্র ঈশানির স্মৃতিতে রয়ে গেছে ।
ঈশানির মনে হয় জীবনদেবতা অত্যন্ত খামখেয়ালি । তাই তার রাজত্বে সব কিছু নিয়ম মত হয় না । লম্বা বরের বেঁটে বউ , লম্বা বউ –এর বেঁটে বর । কত কিছু অনিয়মে চলে । তার ইচ্ছা ছিল ফরসা টুকটুকে নয় , তামাটে গায়ের রঙ এবং লম্বা-চওড়া পেশীবহুল হবে তার জীবনসঙ্গী – অনেকটা রজতাভর মত । কিন্তু রাহুলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর ফুলশয্যার রাতেই সে বুঝতে পেরেছিল সে তার জীবনসঙ্গী হিসেবে কল্পনায় যাকে দেখেছিল তার সঙ্গে রাহুলের কোন মিলই নেই । এখনও ঈশানি মনে করে ফুলশয্যার দিন রাহুল তার মন ও ইচ্ছার কোন খবর না নিয়েই তাকে এক প্রকার জোর করে ধর্ষণ করেছে ।
ফুলশয্যার রাতের কথা মনে পড়লে এখনও ঘৃণায় তার মন ভরে ওঠে । সেদিন রাতে ঈশানি নব বধূর সাজে সেজে পালংকে বসে রাহুলের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ভাবছিল তার স্বামী এসে তাকে চুম্বন করবে । তারপর তারা দুজনে শুয়ে শুয়ে কথা বলার মাধ্যমে পরস্পরকে জেনে নেবে ।
শেষে দৈহিক মিলনের মাধ্যমে তারা দুজনে অচ্ছেদ্য মানসিক ও দৈহিক বন্ধনে বাঁধা পড়বে । সে যে শরীর রজতাভকে দিতে পারেনি সেই কুমারী শরীর তার জীবনসঙ্গীর হাতে নিঃসংকোচে তুলে দিয়ে ধন্য হবে । কিন্তু তার ভাবনা দেখে নিয়তি দেবী বোধহয় একটু মুচকি হেসে ছিলেন । সেদিন রাতে রাহুল ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ঈশানিকে কোন কথা না বলেই বিছানার ওপর পেড়ে ফেলল । ঈশানি ভেবে রেখেছিল একে অপরকে ধীরে ধীরে উন্মোচিত করবে । কিন্তু রাহুল তার ধার দিয়ে না গিয়ে এক হ্যাঁচকায় তার দেহ থেকে লাল বেনারসীটা খুলে নিল । ব্লাউজটা একটানে খুলে ফেলল । ব্রেসিয়ারটার ক্লিপ খোলার ধৈর্য্য তার ছিল না । সে ব্রেসিয়ারটাকে টেনে ওপরে তুলে দিল । ঈশানি দুহাত দিয়ে তার অনাঘ্রাতা কুমারী স্তন দুটোকে বৃথাই আড়াল করার চেষ্টা করল । এরপর তাড়াহুড়ো করে পেটিকোটটা খুলতে গিয়ে রাহুল গিঁট লাগিয়ে ফেলল । তখন টেনে পেটিকোটের দড়িটা ছিঁড়ে ফেলল । এবার ঈশানি ঘরের উজ্জ্বল আলোয় সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় রাহুলের চোখে ধরা দিল । কিন্তু রাহুলের এই পাশবিক ব্যবহার দেখে নরম মনের ঈশানি তার সমস্ত বোধ-বুদ্ধি , লাজ-লজ্জা হারিয়ে ফেলল । সে তখন তার চোখের সামনে সারা জীবনের সঙ্গীকে নয় তার কুমারীত্বের ধর্ষক হিসেবে রাহুলকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ল । এদিকে রাহুল ঈশানির মানসিক অবস্থার কোন খবর না নিয়েই নিজেকে উলঙ্গ করল । নগ্ন অবস্থায় রাহুলকে ঈশানির মূর্তিমান বিভীষিকার মত লাগছিল । রাহুলের সুদৃঢ় পুরুষাঙ্গ দেখে তার মনে হল যেন সাপের উত্থিত ফনা – এখনি তা তার কুমারী যোনি বেদীতে ছোবল মারবে । ভয়ে সে তার চোখ বন্ধ করে ফেলল । রাহুল ঈশানির নগ্ন দেহের উপর উঠে এসে একটি স্তনকে তীব্রভাবে চুষতে লাগল । আর একটিকে হাত দিয়ে নির্মমভাবে পেষণ করতে শুরু করল । ঈশানির কোন ব্যথা লাগছে কিনা তার খবর নেওয়া প্রয়োজন মনে করল না । এভাবে দু-তিন মিনিট কেটে যাওয়ার পর ঈশানি বুঝতে পারল রাহুল পৌরুষকে হাতে করে ধরে তার স্ত্রীঅঙ্গের প্রবেশ পথে আঘাত করতে শুরু করেছে । অজানা ভয়ে ঈশানি কুঁকড়ে গেল । এক সময় রাহুল ভীম বেগে তাকে চিড়ে দিয়ে তার মধ্যে প্রবেশ করল । তীব্র যন্ত্রনায় ঈশানির জ্ঞান লোপ পাওয়ার উপক্রম হল । কিন্তু রাহুল তাকে যন্ত্রণা সহ্য করার সময় না দিয়ে তীব্র গতিতে তার ভিতরে অঙ্গ চালনা করতে লাগল । ঈশানির মনে হল বিবাহ নামক প্রথাটার সুযোগ নিয়ে রাহুল তাকে ধর্ষণ করছে । রাহুলের প্রতি দারুণ এক বিতৃষ্ণায় তার মন ভরে গেল । কিছুক্ষণ পর যখন ঈশানির শরীরও এক অনাস্বাদিত সুখে সাড়া দিতে শুরু করল তখনই রাহুল ঈশানির ভিতর ঝরে গিয়ে তার ওপর থেকে গড়িয়ে নেমে এল । এক অসহ্য কষ্টে ঈশানির চোখ জলে ভরে উঠল । তার মনে হল রাহুলকে ছেড়ে সে রজতাভ, তার প্রথম ভালবাসার কাছে পালাবে । কিন্তু রজতাভর ঠিকানা সে জানত না । আর পালানো হল না । এরপর এক এক করে অর্ক আর তিন্নি জন্মানোর পর সংসারে সে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেল । তাই এত দূরে চাকরি নিয়ে চলে আসাও রাহুলের কাছ থেকে তার একরকম পালিয়ে আসাই ।
দেওয়াল ঘড়িতে ছ’টার ঘন্টা পড়ল । ঈশানি চমকে বিছানার ওপর উঠে বসে মোবাইলটা হাতে নিল । বেশ দামি মোবাইল । রাহুল কিনে দিয়েছে । এদিক দিয়ে রাহুলের কোন কার্পণ্য নেই । মোবাইলে বাটন টিপে অর্ককে মেসেজ পাঠাল – হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ –মা । মেসেজ পাঠিয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ।
আজ রবিবার । ঈশানি ব্যাগ নিয়ে বাজারে বেরোল । প্রতি দিনকার বাজার মোক্ষদাই করে । আজ মোক্ষদা নেই তাই তাকেই বেরোতে হয়েছে । তার একার জন্য একটু মাছ আর দু-একটা সব্জী কিনে বাসায় ফেরার পথে অবনীবাবুর সঙ্গে দেখা ।
– ম্যাডাম বাজার হল ?
-হ্যাঁ । এই অল্প একটু বাজার করলাম ।
-আপনার কাছেই যাচ্ছিলাম । ভালই হল এখানে দেখা হয়ে গেল ।
– তাহলে চলুন । এক কাপ চা খেয়ে আসবেন । ঈশানি ভদ্রতা দেখাল । একেতে অবনীবাবু তার কলিগ এবং সেইসঙ্গে ভীষন পরোপকারী । বলতে গেলে অবনীবাবুই তাকে আর চন্দ্রাকে সমস্ত রকম বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে থাকেন ।
– না । এখন আর যাব না । কথাটা এখানেই বলি ।
– তা যাবেন না যখন তখন এখানেই বলুন ।
-খুব সমস্যায় পড়েছি ।
– ঈশানি মনে মনে ভীত হল । টাকা-পয়সা চেয়ে বসবে নাতো । এই মুহূর্তে হাত একদম ফাঁকা । গত মাসেই রাহুলকে একটা নতুন ঘর করার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছে । অবনীবাবু বললেন-
– সমস্যাটা আমার ব্যক্তিগত নয় – স্কুলের । জানেন তো হেড মিসস্ট্রেস সহ বাকী শিক্ষিকারা সবাই বাইরে থেকে আসেন । কেবলমাত্র আমিই কাছাকাছি থাকি ।
স্কুলের সমস্যা শুনে ঈশানির যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল । তাহলে টাকা-পয়সার ব্যাপার নয় । সে জিজ্ঞাসা করল –
– কি সমস্যা ?
– জানেন তো স্কুলের জন্য আমরা একজন লাব্রেরিয়ান পাব ।
– জানি ।
– লাইব্রেরিয়ান ছেলেটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে আজকেই চলে এসেছেন । অনেক দূরে বাড়ী তো । কাল এলে ঠিক সময়ে স্কুলে জয়েন করতে পারতেন না ।
– ওনার বাড়ী কোথায় ?
– আপনার বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীতে ।
– নাম কি ?
– রজতাভ মল্লিক ।
নাম শুনে ঈশানির বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল । এই কি তার প্রথম ভালবাসার জন রজত ? বাড়ীর ঠিকানা , নাম – সব কিছু কেমন মিলে যাচ্ছে । হে ঈশ্বর এই রজত যেন তার রজতই হয় ।
– ঈশানিকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবনীবাবু জিজ্ঞাসা করলেন –
– চেনেন নাকি ?
ঈশানি তার ভিতরে শুরু হওয়া তোলপাড়কে বাইরে প্রকাশ না করে বলল –
– নাঃ । তা এঁকে নিয়ে কি সমস্যা হল ?
– এখানে তো থাকার জন্য ভাল কোনো হোটেল নেই । তাই ভাবছি ওঁকে যদি আজকে রাতটা আপনাদের মেসে থাকতে দেন তাহলে আমি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হই ।
এ কথা শুনে ঈশানির মন ময়ূরের মত নেচে উঠল । রজতকে আবার কাছে পাবে ভেবে অন্তরে অন্তরে অত্যন্ত পুলকিত হয়ে উঠল । কিন্তু সামনা সামনি তা প্রকাশ না করে বলল
– কিন্তু মেসে আমি আজকে একা আছি । চন্দ্রা বা মোক্ষদা কেউ নেই । এই অবস্থায় আমি একা একজন পর পুরুষের সঙ্গে রাতে একই বাড়ীতে থাকলে আমার বদনাম হবে ।
– ওঃ । অবনীবাবুকে বিমর্ষ দেখালো । – আমার হয়েছে যত জ্বালা । লোকাল লোক হওয়ার জন্য স্কুলের সমস্ত ঝামেলা আমাকে ফেস করতে হয় । অবনীবাবু চুপিচুপি ঈশানিকে বললেন –
– রজতাভবাবুকে ঘর থেকে বেরোতে বারণ করে দেব । একটা রাত কোনোরকমে কাটানোর ব্যবস্থা করে দিন কালকে আমি ওনার জন্য ঘর দেখে দেবো ।
– তাহলে পাঠিয়ে দিন ।
– আপনি আমাকে বাঁচালেন । না করে দিতে পারতেন কিন্তু করেননি । হ্যাঁ , আপনার বৌদি আপনাকে একদিন বাড়ী দিয়ে যেতে বলেছে ।
– সময় করে যাব একদিন ।
– বেশ তাহলে এখন আসি । এই বলে অবনীবাবু হাত তুলে নমস্কার করল ।
– ঈশানি প্রতি নমস্কার করে মেসের দিকে অগ্রসর হল । অবনীবাবুও বাড়ীর পথ ধরলেন ।
সন্ধে ছ’টায় লোডশেডিং হতে ঈশানি মোমবাতি ধরাল । কখন কারেন্ট আসবে কে জানে ? এখানে ঘনঘন লোডশেডিং হয় । পচা ভাদুরে গরমে রাতে লোডশেডিং হলে ঘুম হয় না । তন্দ্রা সেদিন ইনভার্টার কেনার কথা বলছিল । এমাসের মাইনের টাকায় কিনবে ।
তন্দ্রা গরম একেবারে সহ্য করতে পারে না । লোডশেডিং হলে রাতে একেবারে নগ্ন হয়ে শোয় । বললেও শোনে না । উল্টে বলে
– এখানে আমাকে নগ্ন অবস্থায় দেখার জন্য কে আছে শুনি ?
– কেন আমি আমি তো আছি ।
শুনে তন্দ্রা হো হো করে হেসে উঠে বলে
– তুমি তো একটা মেয়ে । মেয়ে হয়ে মেয়ের সামনে উলঙ্গ হতে লজ্জা কি ? তোমার দেহেও যা আছে আমার দেহেও তাই আছে । তাহলে আর লজ্জা কি ?
ঈশানি কিন্তু তন্দ্রার সামনে নিজে থেকে কোন দিন উলঙ্গ হয়নি । একমাত্র রাহুলের সামনেই তাকে সমস্ত লজ্জা বিসর্জন দিয়ে নগ্ন হতে হয় । তবে একদিন লোডশেডিং হওয়ার পর তন্দ্রা নিজে নগ্ন হয়ে ঈশানিকে বিছানায় চিৎ করে ফেলে নাইটি হুস করে তুলে দিয়ে পুরো নগ্ন করে দিল । ঈশানি বাধা দিতে চেষ্টা করলেও তন্দ্রার শক্তির সামনে অসহায়ভাবে আত্মসর্মপন করল। তন্দ্রা একজন পুরুষের মত হাঁটু গেঁড়ে বসে ঈশানিকে চুমু খেতে শুরু করল । তারপর ঈশানির স্তনবৃন্তদুটো চুষতে চুষতে তন্দ্রা তার মুখটা ঈশানির দুই জঙ্ঘার মাঝে নিয়ে যেতেই ঈশানির সমস্ত প্রতিরোধ ভেঙে খান খান হয়ে গেল । তার দেহে কামনার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল । ঈশানির হাত তার সঙ্গে বিদ্রোহ করে তন্দ্রার সমস্ত গোপন অঙ্গে খেলা করে বেড়াতে লাগল । শেষ পর্যন্ত তন্দ্রা আর ঠিক থাকতে না পেরে ঈশানির নগ্ন দেহের ওপর নিজের নগ্ন দেহ মিশিয়ে দিয়ে কোমর ওঠা নামা করে দুজনের গোপনাঙ্গের ক্লিটে ক্লিটে ঘষতে লাগল । দুজনেই সুখে পাগল হয়ে গিয়ে মুখ দিয়ে শিৎকার করতে শুরু করল । গোটা ঘর কামনার গন্ধে ভরে উঠল । এক সময় তাদের সমস্ত উত্তেজনা শান্ত হয়ে গেল । তন্দ্রা ঈশানিকে একটা চুমু খেয়ে বুক থেকে নেমে গিয়ে বলল
– কি , কেমন লাগল ঈশানিদি ?
সে কথার উত্তর না দিয়ে ঈশানি পাল্টা প্রশ্ন করল –
অবিবাহিত মেয়ে হয়ে তুই এ বিষয়ে এত অভিজ্ঞ হলি কি করে ?
তন্দ্রা কোন উত্তর না দিয়ে মুচকি হেসে পাশের ঘরে তার বিছানায় চলে গেল । এর পর যখনই শরীর তেতে ওঠে ঈশানি তন্দ্রাকে নিজের বিছানায় ডেকে নেয় । ওকে জড়িয়ে ধরে শোয় । বিবাহিত জীবনে দৈহিক দিক দিয়ে সে সুখী নয় । রাহুল নারী শরীরের অ আ ক খ কম জানে । সে নিজের সুখটা কড়ায় গন্ডায় মিটিয়ে নেয় । কিন্তু ঈশানি তার সুখের শীর্ষে পৌঁছালো কিনা সে খবর রাখে না । বরং ঈশানিই নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে তার শারীরিক চাহিদা মিটিয়ে নেয় । এর জন্য ভিতরে ভিতরে তার একটা আক্ষেপ আছে ।
এসব কথা চিন্তা করে ঈশানি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে । প্রায় এক মাস হতে চলল রাহুলের সঙ্গে কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়নি । গতকাল সে স্নান করেছে । তারপর থেকেই শরীর তেতে আছে ।
হঠাৎ কারেন্ট এল । মোমবাতি নিভিয়ে ঈশানি খাটে বসতে যাবে এমন সময় – ডিং ডং করে কলিংবেল বাজল । কে এল এই সময় ? তখনই মনে পড়ল অবিনাশবাবু বলেছিলেন স্কুলের নতুন লাইব্রেরিয়ান আজ এখানে থাকবে । তবু নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য ওপর থেকেই চেঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করল
-কে ? এখন যা দিনকাল পড়েছে জিজ্ঞাসা করে কে এসেছে তা নিশ্চিত ভাবে না জেনে দরজা খুললে বিপদ হতে পারে । নিচ থেকে ভারী পুরুষালি গলায় উত্তর পেল
– আমি রজতাভ । অবিনাশবাবু পাঠিয়েছেন ।
গলার আওয়াজ শুনেই ঈশানির বুকের রক্ত ছলাৎ করে উঠল । এ গলা তার রজতের না হয়ে যায় না । ঈশানি পাগলের মত নাইটি পড়েই দৌড়ে নিচে নেমে গেল । আলো জ্বেলে দরজা খুললো । দরজার হুঁড়কো খুলতে গিয়ে উত্তেজনায় তার হাত কাঁপছে । ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছে এ যেন তার প্রথম এবং একমাত্র প্রেমিক রজতই হয় । দরজা খোলার পর ঈশানি সব ফিরে পাবার আনন্দে বাকহারা হয়ে গেল । ও দিকে রজত দরজার এপাড়ে ঈশানিকে দেখে খানিকক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল । তারপর মৃদু হেঁসে ঈশানিকে উদ্দেশ্য করে বলল
– কি ভেতরে আসতে বলবে না ?
স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে ঈশানি একটু লাজুক হেঁসে বলল
– তোমাকে ভেতরে আস্তে বলব নাতো কাকে বলব । এসো ভেতরে এস ।
রজতাভ ভেতরে ঢুকলে ঈশানি দরজা বন্ধ করল।ওকে নিয়ে ওপরে এল।বেডরুমে ঢুকে আলো জ্বেলে রজতাভকে বসতে বলল।রজত না বসে ঈশানি কে জিজ্ঞাসা করল
– আমাকে চিনতে পেরেছো ?
– হঠাৎ একথা কেন ?
– বহু দিন দেখা সাক্ষাৎ নেই।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ দেহে ও মনে বদলে যায়।তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।
– তুমি মনের দিক থেকে বদলেছ কিনা জানিনা।তবে তোমার বহিরাঙ্গের কোন পরিবর্তন হয়নি।আর মেয়েরা যাকে ভালবাসে তাকে সহজে ভুলতে পারেনা।
– তাহলে তুমি আমাকে ভাল বেসেছিলে ?
– কেন সে বিষয়ে তোমার কোন সন্দেহ আছে ? বেশ অভিমান ভরা গলায় ঈশানি রজতকে প্রশ্ন করল।তুমি সে সময় আমার কাছে যা চেয়েছিলে সেটা তখন আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভবপর ছিল না।সব মেয়েই চাইবে বিয়ের পর তার কীট দংশনহীন দেহটা স্বামীর কাছে তুলে দিতে।তাই সে সময় আমি নিজের দেহটা তোমার হাতে তুলে দিতে পারি নাই।কিন্তু মনটাতো দিয়েছিলাম।তোমার সঙ্গে সামাজিক বন্ধনে বাঁধা পড়লে আমার দেহটাও তুমি পেতে।তুমি আমাকে না বুঝে দূরে সরে গিয়েছিলে । অথচ তোমাকে আমি কোনদিনই ভুলতে পারিনি । বিয়ের পরেও তোমার সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার মনে ভীড় করে আসে।আর তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করছ তোমাকে আমি ভালবাসতাম কিনা ?
রজতের ইচ্ছা করছিল ঈশানিকে দুহাতের মধ্যে জড়িয়ে ধরে সব অভিমান দূর করে দেয়। সে হাত বাড়িয়েও হাত গুটিয়ে নেয় এইভেবে যে তার ঈশানি এখন পরস্ত্রী। তাকে ছোঁয়ার অধিকার তার নেই।তাই সে হাত জোড় করে ঈশানির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। ঈশানি রজতের মনের টানা পোড়েনটা বুঝতে পেরে আনন্দিত হয় এইভেবে যে রজত তাকে এখনও ভালবাসে। সে স্বাভাবিক গলায় বলল – – রজত বসবে নাকি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কথা বলবে ? রজত একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে চেয়ারে বসল। ঈশানি খাটে বসল। রজত বলল – কালকে অতদূর থেকে এসে জয়েন করা হতনা।তাই আজ চলে এলাম। – হ্যাঁ , ভালই করেছ। তোমার সম্পর্কে অবিনাশবাবু আমাকে সব বলেছেন। তবে আমি তখন আন্দাজ করতে পারলেও নিশ্চিত ছিলাম না তুমিই কিনা। – আমাকেও যখন অবিনাশবাবু বললেন স্কুলের এক ম্যাডামের বাসায় রাত কাটাতে হবে তখন আমি প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর তিনি যখন বললেন ম্যাডামের বাড়ী আপনার ওদিকে – নাম ঈশানি , তখন মনে হল তুমি হতে পার। কারণ আমি শুনেছিলাম তুমি এইদিকেরই একটা স্কুলে জয়েন করেছো। তারপর তুমি যখন দরজা খুললে তখন নিশ্চিত হলাম। তখনই মাথায় একটা দুষ্টুবুদ্ধি খেলেগেল। মনেহল পরীক্ষা করে দেখি তুমি আমাকে মনে রেখেছো কিনা। তাই কিছুক্ষণ আগে তোমাকে ওই কথাগুলো বলেছিলাম। কিন্তু ভাবতে পারিনি তুমি ওভাবে রিঅ্যাক্ট করবে। তোমাকে নাবুঝে আঘাত করার জন্য আবার ক্ষমা চাইছি।
ঈশানি হেঁসে ফেলে বলে
– অত আর ক্ষমা চাইতে হবে না। তা শুধু মুখেই গল্প করবে না সঙ্গে চা-টা কিছু খাবে।
– খাওয়ালে মন্দ হয় না।
ঈশানি উঠে গেল চা করতে। রজতাভও তার পেছনে পেছনে গেল। রান্না ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ঈশানির সঙ্গে গল্প করতে লাগল।ঈশানি বলল
– তুমি আজ এসে বেশ ভাল করেছো। গতকাল রাতে একা ছিলাম। একটুও ঘুম হয়নি।
– আজও হবেনা।
ঈশানি একটু থমকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল
– মানে ?
– মানে কিছু নয়। এতদিন পর দেখা হল। তাই ঘুমিয়ে না কাটিয়ে আজ সারারাত গল্প করব।আর ……….
– আরকি ? ঈশানি কেঁপে উঠে জিজ্ঞাসা করল।
আর কিছুনা।মজা করছিলাম।
– বাঁদর মারব এক কিল।
রজতাভ হো হো করে হেঁসে উঠে বলল এটাই শুনতে চাইছিলাম। সময় তার মর্জি মত এগিয়েছে। কিন্তু তুমি এতটুকুও বদলাও নাই। আগের মতই একই ভঙ্গিতে একই রকম ভাবে বললে। তা আগেতো বলার সঙ্গে সঙ্গে পিঠেও দুম করে দিতে। আজও দেবে নাকি ? এই বলে সে পিঠ পেতে রান্নাঘরে ঢুকে পড়লো। ঈশানি হো হো করে হেসে উঠে আগের মতই পিঠে দুম করে একটা কিল বসিয়ে দিল। তারপরই রজতের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে মনে মনে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। এদিকে কেটলিতে চায়ের জল শোঁ শোঁ শব্দে ফুটে উঠল। সেই শব্দে থতমত খেয়ে রজতের হাতটা ছেড়ে দিয়ে লজ্জায় পিছন ফিরে চা করতে লাগল। রজতও ঈশানির বিহ্বলতা আর না বাড়িয়ে পায়ে পায়ে আগের জায়গায় ফিরে এসে চেয়ারে বসে একটা সিগারেট ধরিয়ে গোটা ব্যাপারটা ভাবতে লাগল। তার মনে একটা সম্ভাবনার কথা উঁকি মেরেই মিলিয়ে গেল।
ঈশানি চা করে নিয়ে ঘরে এল। ততক্ষণে সে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সে বলল – কেমন লাগছে তোমার এখানে এসে ?
– আমার প্রথমে ভয় করছিল। মেয়েদের স্কুলে জয়েন করতে হবে। কেমন হবে সহকর্মীরা ? এখন তোমার দেখা পেয়ে আর ভয় নাই।
– তোমার বেডিং কোথায় ?
– অবিনাশবাবুর বাড়ীতে।
– কাল নিয়ে আসবে।
– সত্যি বলছো ! রজত ঈশানির হাতদুটো জড়িয়ে ধরল – তোমাদের মেসে আমাকে থাকতে দেবে ?
– তিনটে মহিলা থাকি – আমি , তন্দ্রা আর রান্নারলোক মোক্ষদা।তুমি থাকলে আমরা নির্ভয়ে থাকতে পারব।তবে ভয় পাচ্ছি তন্দ্রাকে নিয়ে।
– কেন ?
– ও তোমাকে পেলে ছিঁড়ে খাবে।
– ম্যান ইটার নাকি ?
– তা বলতে পার।দৈহিক ব্যাপারে ও খুব অ্যাগ্রেসিভ।
– কুছ পরোয়া নেহি। লড়ে যাব।
– অসভ্য। ঈশানি ওর গায়ে একটা থাপ্পর মারল – সব বিষয়ে মজা করার স্বভাবটা এখনও গেলনা।তুমি বিয়ে করেছো ?
– এবার তাহলে তুমি আমাকে নিয়ে মজা করতে চাইছ ?
– মানে ?
– রজত হো হো করে হাঁসতে হাঁসতে বলল আমার মত কাঠবেকার , যার নিজেরই কোন চালচুলো নেই তাকে মেয়ে দেবে কে ?
হঠাৎই রজতাভ গম্ভীর হয়ে গেল। তাই দেখে ঈশানি ফের বলে উঠল –
– কি হল তোমার ?
– বয়স বাড়ছিল। চাকরি না পেয়ে ফ্রাস্টেটেড হয়ে পড়েছিলাম।রজতাভর গলা ধরে এল – তবুও হাসতে ভুলিনি জানো। এই হাসিমশকরাই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ঈশানি সব দুঃখ বেদনা ভুলে বাঁচতে শেখো।
রাতের খাওয়া শেষ করে রজত আর ঈশানি মেতে উঠল পুরানো দিনের সুখ – দুঃখের গল্পে । এত গল্প ঈশানি বিয়ের এত বছরে রাহুলের সঙ্গেও করেনি । হঠাৎ রজত বলে উঠল –
-তোমার মত স্ত্রী যে পুরুষ পেয়েছে সে অত্যন্ত ভাগ্যবান ।
-এবার নিশ্চই বলবে আমার মত ভাগ্যবতীও আর কেউ নেই ।
-নিশ্চই তুমি ভাগ্যবতী । ধনবান এবং বিদ্বান স্বামী ।তুমি নিজে চাকরি কর । আর কি চাই ।
-ঠিকই বলেছ । আপাতদৃষ্টিতে আমার মত ভাগ্যবতী ও সুখী আর কেউ নেই । কিন্তু আমার সব কথা জানলে একথা বলতে না ।


Tags: , , , , , , , , , , , , , , , , ,

Comments are closed here.